গ্রামীণ জনপদের পাড়ায়-মহল্লায় আগে দল বেঁধে লুকোচুরি, গোল্লাছুট, ডাংগুলি আর শৈশবের উচ্ছ্বাস গড়াগড়ি খেলেও এখন সেসবের দেখা মেলা ভার। ইট-পাথরের শহর তো বটেই, গ্রাম-গঞ্জেও এখন শৈশব-কৈশোর বন্দি হয়ে গেছে ল্যাপটপ-স্মার্টফোন বা ডিভাইসের ফেসবুক-গেমসে।
গিজগিজে ঢাকা থেকে শৈশবের সেই উচ্ছ্বাসমাখা খেলাধুলা তো কবেই ‘নেই’ হতে শুরু করেছে। এরপরও মাঝে-সাঝে সেই খেলাধুলা নজরে এলে স্মৃতি টেনে নিয়ে যায় শৈশবে।
সেদিন রাজধানীর সায়দাবাদে এমনই স্মৃতিজাগানিয়া খেলায় মত্ত দেখা গেল একদল শিশুকে। ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা। কোথাও এটা পাক্কাপাক্কি, আবার কোথাও এলন্টি বেলন্টি লণ্ঠন খেলা বলে পরিচিত।
সায়বাদের শিশুর দল বলছিল পাক্কাপাক্কিই। এই খেলার নিয়ম হলো দেয়াল, গাছ বা অন্যকিছুতে একজন মুখ লুকিয়ে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনবে। এরমধ্যে খেলার অন্য অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের মতো দৌড়ে দূরে চলে যাবে। আর সেই মুখ লুকোনো অংশগ্রহণকারী অন্যদের দৌড়ে ছুঁয়ে ফেলার চেষ্টা করবে। যাকে প্রথমে ছুঁবে, সেই আবার প্রথমোক্ত ব্যক্তির মতো অন্যদের দৌড়ে ছোঁয়ার জন্য চিহ্নিত হবে। এভাবে যতক্ষণ খেলা যায় হাসাহাসি-গড়াগড়ির খেলা।
সাধারণত একজনকে ছুঁতে গেলে অন্য ক’জন প্রথমোক্তকে পেছন থেকে ভেলকি দিলেই খেলাটা জমে ওঠে, কারণ সে পেছনের লোকটাকেই আবার ছুতে চেষ্টা করে, এসময় অন্যরা আবার তাকে পেছন থেকে ভেলকি দেয়। সংকীর্ণ রাস্তা বা মাঠের চেয়ে এ খেলা কয়েকগুণ আনন্দপূর্ণ হয় প্রশস্ত মাঠে।
সায়দাবাদে সেদিন খেলছিল ইমরান, জিসান, ইয়াসিন, নাবিয়া, ফাবিয়া, আখি, ফাহিম ও শাহিন। উচ্ছ্বাস-হাসাহাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিল যেন তারা।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া জিসান বাংলানিউজকে জানায়, পড়াশোনার চাপে এখন আর খেলতে পারে না তারা। ঈদের ছুটি বলে খেলতে পারছে এখন। তবে সুযোগ পেলেই এই দৌড়াদৌড়ির খেলা খেলতে চায় তারা।
আর ইমরান আর জানায়, তারা গেমস-টেমস খেলে না। সময় পেলে পড়ার ফাঁকে ফুটবল, ক্রিকেটের পাশাপাশি বরফপানি, চোরপুলিশ, কুমির কুমির ও সেন্টার ফ্রুট নামের মজার সব খেলাও খেলে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৭
এএম/এইচএ/