নিজের আগ্রহ
একটা প্রাণীকে নিজের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে আসলেই আগ্রহী কিনা তা যাচাই করুন। এক্ষেত্রে পোষা প্রাণীর সব দায়িত্ব নিজের ওপর বর্তাবে।
পরিবারের সম্মতি
পোষা প্রাণীটি যেহেতু আপনার পরিবারেরই একজন সদস্য হতে যাচ্ছে, তাই যাচাই করে নিন পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্মতি আছে কিনা। তাছাড়া পরিবারের কোনো সদস্যের পোষা প্রাণী সংক্রান্ত ভয় বা কোনো প্রকার অ্যালার্জি আছে কিনা জেনে নিন। ফ্ল্যাটে অনেক সময় কুকুর-বিড়াল পোষার জন্য অন্য বাসিন্দা বা ফ্ল্যাট মালিকের অনুমতির দরকার হয়।
ভ্যাক্সিনেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
পোষা প্রাণীকে নিয়মিত ভ্যাক্সিন দিতে হবে। ভ্যাক্সিনেশন ছাড়াও নিয়মিত নজর রাখতে হবে স্বাস্থ্যের দিকে। ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত ভেটেরিনারি সংস্থা কেয়ার ফর প’স (সিএফপি) এর সিনিয়র চিকিৎসক ওয়াজেদ মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, পোষা প্রাণীটির হঠাৎ বমি শুরু হয়, দুর্বলতা দেখা দেয়, পাতলা পায়খানা হতে থাকে, বমি বা পায়খানার সঙ্গে ক্রিমি বের হয়- এরকম লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সময়ে কাছের ভেটেরিনারি ক্লিনিকে নিয়ে যাবেন। তবে নিয়মিত ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় থাকা পোষা প্রাণী এধরনের ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকে।
নিরাপত্তা
বাসার প্রতিটি জানালায় ও বারান্দার গ্রিলে নেট থাকতে হবে, নয়তো পোষা প্রাণীটি নিচে পড়ে যেতে পারে। এমনটাই জানালেন নিকেতনের অধিবাসী নাদিয়া ইসলাম। তিনি জানান, বিড়াল সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত। তা হলো বিড়াল উপর থেকে নিচে পড়ে গেলে মরে না বা আহত হয় না। বাস্তবে এটি একেবারেই ভুল। বহুতল ভবন থেকে পড়ে গিয়ে অনেক বিড়াল মারা যায় বা প্যারালাইজড হয়ে যায়।
বর্তমানে নাদিয়া ইসলামের বাসায় পোষা বিড়ালের সংখ্যা নয়টি।
নির্দিষ্ট স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করার প্রশিক্ষণ দেওয়া
বিড়াল সাধারণত মাটি বা বালুতে মলত্যাগের পর তা ঢেকে দেয়। কিন্তু বাইরে গেলে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু দেহে বহন করে আনতে পারে। তাই লিটার বক্সের মাধ্যমে বিড়ালের মল-মূত্র ত্যাগের ব্যবস্থা করতে হবে। কিছু কিছু প্রজাতির কুকুর সহজেই মল ত্যাগের প্রশিক্ষণ পেয়ে যায়। আর কিছু কিছু প্রজাতিকে এই প্রশিক্ষণ দিতে অনেক সময় লাগে। এমন কথাই জানালেন বাসাবোতে বসবাসকারী হেয়া চৌধুরী। বুজো নামের একটি স্পিটজ (Spitz) প্রজাতির কুকুর রয়েছে তার। বুজোর বয়স এখন সাড়ে তিন বছর। তুলোর মতোন তুলতুলে বুজোকে প্রশিক্ষণ দিতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে হেয়া চৌধুরীকে। কারণ এ প্রজাতিটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া বেশ কষ্টসাধ্য।
বাইরে হাঁটতে নিয়ে যাওয়া
আপনার পোষা কুকুরকে নিয়ে রাস্তায় বা পার্কে নিয়মিত হাঁটতে বের হওয়া উচিত। এতে আপনার যেমন স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকবে, আপনার আদরের কুকুরটিও পাবে আনন্দ।
তৃষা অভি সাহার প্রতিদিনের খেলার সঙ্গী দেড় বছরের কুকুর গোল্ডি। সে জাতে গোল্ডেন রিট্রাইভার। সারাদিন অপেক্ষায় থাকে কখন মালিকের সঙ্গে হাঁটতে বের হওয়ার সুযোগ মিলবে। তৃষা প্রতিদিন গোল্ডিকে নিয়ে হাঁটতে বের হন। তিনি জানান, হাঁটতে বের হওয়ার জন্য সকালটা সবচেয়ে উপযুক্ত। বিকেল নেমে যাওয়ার পরেও অনেক্ষণ পর্যন্ত রাস্তার পিচ গরম থাকে। কুকুরকে গরম পিচের উপর হাঁটানো উচিত নয়।
এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে আপনার পোষা প্রাণীটি প্রতিবেশীদের বিরক্ত করছে কিনা। অনেক সময় বাড়ির বাইরে গিয়ে পোষা প্রাণী হারিয়ে যেতে পারে। বেড়াতে আসা অতিথির যদি কুকুর-বিড়াল ভীতি থাকে তবে আপনার পোষা প্রাণীটিকে অতিথির নাগালের বাইরে রাখুন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এনএইচটি/এএ