নতুন একটি সমীক্ষা শেষে প্রকাশ করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ শহরগুলোর তালিকা। আর যে বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তা হলো- শহরের পরিবহন ব্যবস্থা, গাছপালার পরিমাণ, অর্থনৈতিক অবস্থা, বসবাসকারীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং শহরের আবহাওয়া।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে—সেরা দশ শান্তিপূর্ণ শহরের চারটির অবস্থানই জার্মানিতে। এর মধ্যে দক্ষিণ জার্মানির শহর স্টুটগার্টের অবস্থান এক নম্বরে। সেরা দশে জার্মানির অন্য শহরগুলো হচ্ছে- হ্যানোভার (তৃতীয়), মিউনিখ (পঞ্চম) ও হামবুর্গ (নবম)।
ইউরোপের ছোট্ট শহর লুক্সেমবার্গ সিটি বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা শান্তির শহর। ইউরোপের বাইরে অবস্থিত একটি মাত্র শহর সেরা দশে এসেছে, সেটি ২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের শহর সিডনি (অষ্টম)।
ওদিকে বিশ্বের সবচেয়ে অশান্তির শহর হিসেবে নাম রয়েছে বাগদাদের। কাবুলের অবস্থান সে তালিকার দ্বিতীয়তে।
ভাবছেন অশান্তির তালিকায় ঢাকা শহরের নাম এসে যায় কিনা। আপনার শঙ্কা সত্যিই, অশান্তির দিক থেকে ঢাকার অবস্থান সাত নাম্বারে। এরপরেই অবস্থান করছে আরও দু’টি পরিচিত নাম- করাচি (অষ্টম), দিল্লি (নবম)।
সমীক্ষা মতে, স্টুটগার্টকে শান্তির শহর বলা হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবনযাপন বিশ্লেষ করেন। যেমন শহরের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী। এ শহরেই যাত্রা শুরু করে জনপ্রিয় ব্যান্ড পোরশে, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও বশ। তাছাড়া এ শহরে সবুজের সমারোহও সবচেয়ে বেশি। শহরের আশপাশ দিয়ে আছে পাহাড়, উপত্যকা ও বিস্তীর্ণ আঙ্গুর ক্ষেত।
পরিবহন ব্যবস্থার দিক থেকে এগিয়ে আছে সিঙ্গাপুর। এ শহরের প্রায় প্রত্যেক বাসিন্দাই গণপরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট।
জনসংখ্যার অনুপাতে অপরাধের হারের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত সবচেয়ে নিরাপদ শহরগুলোর তালিকায় এক নম্বরে আছে আবুধাবি। জাপানের ওসাকা শহরের অবস্থান এ তালিকার দ্বিতীয়তে।
আইভরিকোস্টের আবিদজান শহরকে বলা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে কম শব্দদূষণের শহর।
অর্থনৈতিক দিক থেকে করা অপর এক তালিকায় দেখা গেছে, কম্বোডিয়ার রাজধানী নম-পেনের বেকারত্বের হার বিশ্বের অন্যান্য শহরের তুলনায় সবচেয়ে কম। ব্রুনাইয়ের রাজধানী শহর বন্দর সেরি বেগাওয়ানে মাথা পিছু দেনার পরিমাণ সবচেয়ে কম।
আর জীবনযাপনের খরচের সঙ্গে পারিবারিক আয়ের তুলনা করলে মিউনিখ শহরের অবস্থান এক নম্বরে। মিউনিখের পরেই অবস্থান করছে লুক্সেমবার্গ, সিডনি, মোনাকো ও স্টুটগার্ট।
মানসিক স্বাস্থ্যে সেরা অবস্থানে আছে লুক্সেমবার্গ, বোর্ডেয়ক্স ও গ্রাজ। শারীরিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে সেরা আইসল্যান্ডের রেইকজাভিক।
বিস্ময়কর হলো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও চাকচিক্যময় কিছু শহর শান্তির তালিকায় রয়েছে অনেক পিছিয়ে। যেমন- লন্ডন (৭০), টোকিও (৭২), প্যারিস (৭৮), নিউইয়র্ক (৮৪)।
বলা হয়, সুখে থাকতে নাকি পয়সা লাগে না। অথচ শান্তির শহর সিডনি, ভ্যানকুভার, মোনাকো ও এডিনবার্গ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
এনএইচটি/এইচএ/