প্রযুক্তির উৎকর্ষে স্থাপত্যে ভিন্নমাত্রা ও সৃষ্টিশীলতা যোগ হলেও প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাননি বিশ্বের নামিদামি স্থপতিরা। বরং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃতির আরও নিবিড় সৌন্দর্য উঠে এসেছে স্থাপত্যশিল্পে।
বেইজিং ন্যাশনাল স্টেডিয়াম
২০০৮ সালের অলিম্পিক গেমসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিলো পাখির বাসার ডিজাইনের এ স্টেডিয়ামটি। নাম বেইজিং ন্যাশনাল স্টেডিয়াম হলেও নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগে থেকে স্থানীয় মানুষের কাছে এটি পাখির বাসা নামে পরিচিত। কনসার্ট ও বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় এখানে। আগামী ২০২২ সালের অলিম্পিক গেমসও এ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
লোটাস টেম্পল, দিল্লি
দিল্লির লোটাস মন্দির হলো বাহাই ধর্মে বিশ্বাসী একাত্ম মানুষের জন্য ধর্মাচরণের একটি জায়গা এবং এটি বিশ্বের এক অন্যতম স্থাপত্য বিস্ময়। এটি ১৯৮৬ সালে উন্মুক্ত হয়। বাহাই ধর্মের পবিত্র সংখ্যা ৯ এবং এর সঙ্গে মিল রেখে এ মন্দিরে নয়টি প্রবেশ দ্বার। মন্দিরের প্রধান স্থাপত্যশিল্পী ছিলেন ফেরিবোর্জ সাহবা। এর নকশা তৈরির সময় সাহবা যে বিষয়গুলো মাথায় রেখেছিলেন- মন্দিরের ব্যবহৃত প্রতীকগুলি ভারতীয় মানুষদের কাছে যেন পরিচিত হয়, এটি যেন অন্য কোনো স্থাপত্যের মতো দেখতে না হয় এবং বিদ্যমান প্রতিটি উপকরণ যেন বাহাই বিশ্বাস সম্পর্কে একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে।
এটমিয়াম, ব্রাসেলস
বেলজিয়ামের রাজধানী শহর ব্রাসেলসের উত্তরে অবস্থিত অণুর বিভিন্ন মলেকিউলের মতো দেখতে এ বিস্ময়কর স্থাপত্যটি। এটি নির্মাণ করা হয় ১৯৫৭ সালে। প্রকৌশলী আন্দ্রে ওয়াটারকিন ও ক্রিস্টিন কনিক্স এর ডিজাইন করেন। বাইরেটা সম্পূর্ণ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। ১০২ মিটার উঁচু এ ভবনটি জাদুঘর ও বিভিন্ন প্রদর্শনীর জন্য ব্যবহার করা হয়।
হেলিক্স ব্রিজ, সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরের পথচারীদের জন্য নির্মিত হেলিক্স ব্রিজ। ডিএনএ’র গঠন অনুকরণে নির্মাণ করা হয়েছে মনোরম এ স্থাপনাটি। সমুদ্র উপকূলে নির্মাণ করা এ ব্রিজটি থেকে সমুদ্রের পাশাপাশি আকাশের চিত্রটাও সুন্দর দেখা যায়। তাছাড়া এ ব্রিজ থেকে সিঙ্গাপুর সিটির সামগ্রিক দৃশ্য নজরে পড়বে। ব্রিজটি স্থাপত্য উৎসবে ‘বিশ্বের সেরা পরিবহন স্থাপত্য’ হিসেবে পুরস্কার জিতেছে।
আলদার হেডকোয়ার্টার, আবুধাবি
ঝিনুকের খোলসের অনুকরণে নির্মাণ করা হয়েছে এ ভবনটি। এটি মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গোলাকার ভবন। ২০১০ সালে নির্মাণ করা হয় ১১০ মিটার উঁচু এ ভবনটি। স্থাপনাটির নকশায় গোল্ডেন রেশিও অনুসরণ করা হয়েছে।
তাইপেই ১০১, তাইওয়ান
৮ সংখ্যাটি চায়নিজ ও তাইওয়ানিদের কাছে সৌভাগ্যের সংখ্যা হিসেবে বিবেচিত আর তাই চায়নিজ সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যবাহী ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত এই সংখ্যা নকশা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। প্রতি আটটি ফ্লোরের একটির সঙ্গে আরেকটির কাঠামো যুক্ত। এই অনন্য বৈশিষ্ট্যই ‘তাইপে ১০১’-কে বিশ্বের সবচেয়ে মজবুত ও শক্ত ভিত্তি কাঠামো দিয়েছে। ভবনটি তাইওয়ানের, জিনই জেলার, তাইপে শহরে অবস্থিত। এর আগের নাম ছিল তাইপে ওয়ার্ল্ড ফিন্যান্সিয়াল সেন্টার। ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এটি ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন।
কিউব হাউজ, রটারডেম
কিউব আকারের এ বিল্ডিংটি নেদারল্যান্ডের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র। মোট ৩৮টি ছোট ছোট হলুদ রঙের চতুষ্কোণ ঘর দিয়ে নির্মিত এটি। প্রতিটি ঘর ৪৫ ডিগ্রি কোণ সৃষ্টি করে। ১৯৭৭ সালে নির্মাণ করা হয় ভবনটি। এর অবস্থান নেদারল্যান্ডসের রটারডেম শহরে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
এনএইচটি/এএ