ঢাকা: মাত্র ১১ মিনিটের মাথায় আত্মঘাতী গোলে কিছুটা হতাশা ভর করলেও বল দখল, আক্রমণ, প্রতিরোধ- সবদিক থেকেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে এগিয়েছিল ব্রাজিল। এগিয়ে থাকার ফলাফল ম্যাচ শেষে ৩-১ গোলে জয়লাভ।
লড়াইয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকলেও প্রথম দিকে গোলবারের জাল যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না নেইমার-অস্কার- ফ্রেডরা। উল্টো মার্সেলোর আত্মঘাতী শট ১১ মিনিটের মাথায় নিজেদের জালে বল জড়ায়। এরপর ২৭ মিনিটের মাথায় নেইমার হলুদ কার্ড পেলে খানিকটা হতাশা ভর করে ব্রাজিল শিবিরে। তবে হতাশার সেই মেঘ উড়িয়ে দেন খোদ নেইমারই। ২৯ মিনিটেরই মাথায় অস্কারের পাস থেকে বাম পায়ে শট নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার গোলপোস্টের ডান দিকের মাটি কামড়ে বল জালে পাঠান। ব্যস উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে পুরো সাও পাওলোর অ্যারিনা কোরিন্থিয়াস স্টেডিয়াম, এমনকি ব্রাজিল ছাড়িয়ে সাম্বার দেশের ফুটবলভক্ত পুরো বিশ্ব।
২৮ মিনিট পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে থাকলেও ২৯ মিনিটেরই মাথায় ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ১-১ সমতায়।
এরপর ৪৫ মিনিটের সঙ্গে যোগ হওয়া অতিরিক্ত দুই মিনিট মিলিয়ে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ১-১ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দু’পক্ষই খানিকটা ধীর গতিতে খেললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের খোলস আরও ছাড়তে থাকেন অস্কার-নেইমাররা।
৭১ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের ভেতরে ক্রোয়েশীয় ডিফেন্ডার লেজান লোভরেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ফ্রেডকে ফাউল করলে নেইমারদের পক্ষে প্যানাল্টির সংকেত দেন রেফারি। আর হলুদ কার্ড দেখান লোভরেনকে।
প্যানাল্টির এই সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেননি নয়া ‘পেলে’ নেইমার। ডান পায়ে শট নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার গোলপোস্টের বাম পাশের উপর দিয়ে জালে গড়ান বল। গোলকিপারের হাতে লাগলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ফের উচ্ছ্বাসে ভাসে সাও পাওলো তথা ব্রাজিল।
সবশেষে ৯০ মিনিটের মাথায় রামিরেসের পাস থেকে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে শট নিয়ে ক্রোয়েশিয়ানদের গোল পোস্টের বাম কোণের উপর দিয়ে বল জালে পাঠান অস্কার।
ম্যাচের শেষে ফলাফলে দেখা যায়, প্রতিপক্ষের জাল লক্ষ্য করে ব্রাজিল শট নিয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে ৫টি অবশ্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে, বাকি ৬টি ফিরিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক। অপরদিকে ১১টি শট নেওয়া ক্রোয়েশিয়ানদের বল চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছেছে একবারই (শট থেকে আত্মঘাতী)। তিনটি শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বাকি পাঁচটি।
ডি-বক্সের ভেতরে ১৬টি গোলের সম্ভাবনা মোকাবেলা করেছেন ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডাররা। অপরদিকে ২১টি আক্রমণ ঠেকাতে হয়েছে ক্রোয়েশীয়দের।
পাঁচটি ফাউল করে একটির জন্য হলুদ কার্ড পেয়ে গেছেন ব্রাজিলের প্রাণভোমরা নেইমার। অপরদিকে ২০টি ফাউল করেছে একটি হলুদ কার্ড পেয়েছে ক্রোয়েশিয়ানরা।
কর্নার কিক ব্রাজিল করেছে সাতটি, আর ক্রোয়েশিয়ানরা পেয়েছে তিনটি। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা আক্রমণভাগে গিয়ে একবার অফসাইডের সংকেত পেয়েছেন। এ ধরনের সংকেত একবার পেয়েছে ক্রোয়েশিয়াও।
প্রথমার্ধে ৭০ শতাংশ থাকলেও পুরো ম্যাচে ব্রাজিলিয়ানদের বল দখলে ছিল ৬১ শতাংশ, আর প্রথমার্ধে ৩০ শতাংশ থাকলেও পুরো ম্যাচে ৩৯ শতাংশ নিয়ে খবরদারি করেছেন ক্রোয়েশিয়ানরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৪