দুইবারই অনসাইড ছিলেন সান্তোস। অথচ দুইবারই পতাকা উঁচিয়ে ধরলেন রেফারির সহযোগী হামবারতো কালিহো।
নিজের চোখকে বিশ্বাস না করে দু'বারই সায় দিলেন সহযোগীর উত্তোলিত পতাকার পক্ষে।
বাতিল করে দিলেন মেক্সিকান স্ট্রাইকার দোস সান্তোসের দেওয়া দুই'দুটি গোল! বিশ্বকাপ শুরু দ্বিতীয় দিনের প্রথম খেলায় ঘটে এই কাণ্ড।
যদিও শেষ অব্দি পেরালটা'র দেওয়া একমাত্র গোলে ক্যামেরুনকে হারিয়ে পার পেয়ে যায় মেক্সিকো। এই খেলাতেই অফসাইড সিদ্ধান্তে বাদ হয়ে যায় আরও এক গোল। যদিও তা অফসাইড-ই ছিলো। গোলটা করে ছিলো ক্যামেরুন ।
শুধু বিশ্বকাপ কেন এই পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অতীতে কোনোদিন এমন ঘটনা ঘটেছিলো কিনা শুনি নি। এক খেলোয়াড়ের দেওয়া দুই লেজিটিমেট গোল বাতিল! গোলগুলো যে শুদ্ধ ছিলো তাতো টিভি-রেডিওর ভাষ্যকাররা বলছিলেনই। বলছিলেন বিষেশজ্ঞরাও।
সবকিছুর পর ক্যামেরার স্লো-মো শটকে অস্বীকার করবেন কিভাবে? ফুটবলে 'অফসাইড' আইনটা যদি বোঝেন তাহলে বারবারই দেখবেন তা ছিলো রেফারির ভুল ।
মানি...রেফারিরা মানুষ, ভুল তাদের হতেই পারে! তাছাড়া তারাতো আর ক্রিকেটের থার্ড আম্পায়ারের মতো ভিডিও ফুটেজ দেখে সিদ্ধান্ত দেননি ।
যা করেছেন তাতো দু'এক সেকেন্ডের দেখা থেকেই। দ্বিতীয়বার দেখার সুযোগতো হাম্বারতো'র ছিলোনা। তাই বলে বিশ মিনিটের মধ্যে দু'বার এমন ভুল!
আমরা খেলা দেখা মানুষরাই তো মেনে নিতে পারছিনা এটা। সান্তোস পারবেন কি করে!
জাতীয় দলে ঢোকার পর থেকেই বিশ্বকাপ ঘরানার খেলোয়াড়রা স্বপ্ন দেখা শুরু করে 'একদিন বিশ্বকাপ খেলবোই'। আর সেই খেলোয়াড় যদি হয় ফরোয়ার্ড বা স্ট্রাইকার, তার স্বপ্নতো একটাই - বিশ্বকাপের আসরে গোল করবো। দেশকে জেতাবো ।
এই স্বপ্নকে বাস্তব করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন চলে প্রচেষ্টা আর প্রশিক্ষণ। তারপরও বিশ্বের সর্বোচ্চ আসরে এসে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় অনেক প্রতিভাবানকে। জীবনে দ্বিতীয় বার আসেনা সেই সুযোগ।
দুঃখই হয় সান্তোসের জন্যে। বঞ্চিত হলেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সামনে ,তার প্রাপ্য থেকে। তাও আবার অন্যের ভুলে। যে গোলে শেষ পর্যন্ত দল জিতলো, তাতেও ছিলো তার আংশিক কৃতিত্ব ।
পরের রাউন্ডে মেক্সিকোর যদি না যাওয়া হয়, আরো দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ আছে তাদের চলতি রাউন্ডে। ব্রাজিল আর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। দোস সান্তোসের হয়তো আবার সুযোগ আসবে গোল করার । হয়তো পারবেন । হয়তো না। তবে ক্যামেরুন ম্যাচে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার দুঃসহ স্মৃতিতো কোনো দিনও ভোলা হবেনা তার! ভোলা হবেনা রেফারির অবিশ্বাস্য ,উপর্যুপরি ভুল !
বাংলাদেশের আধুনিক স্পোর্টস সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মনে করা হয় তাকে। বর্তমানে কানাডার মন্ট্রিয়লে থাকেন। তবে এখনও স্পোর্টস এবং লেখালেখি তার হ্রদস্পন্দনের সাথেই যেনো মিশে আছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের এবারের আয়োজনে ফরহাদ টিটো লিখছেন বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৪