ঢাকা: ম্যাচের বেধে দেওয়া সময় (৯০ মিনিট) পর্যন্তও ১-১ সমতায় খেলছিল সুইজারল্যান্ড ও ইকুয়েডর। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হতে থাকলেও ড্র’তেই যেন ম্যাচটির মীমাংসা হতে চলছিল।
প্রথমে গোল হজম করেও ম্যাচ শেষে ২-১ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সুইজারল্যান্ড।
‘ই’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচের শেষ মুহূর্তের আগ পর্যন্ত ১-১ গোলে খেলতে থাকা দু’দলই জয় তুলে নিতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে
প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরার পর বেশ ক’বার প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেয় সুইজারল্যান্ডের স্ট্রাইকাররা। কিন্তু একবারই গোলপোস্টে বল জড়াতে সমর্থ হন রিকার্ডো রদ্রিগেজ। তবে, তার আগেই অফসাইডের সংকেত দেন লাইন্সম্যান। পাল্টা আক্রম করে বেশ ক’টি দর্শনীয় শট নেয় ইকুয়েডরও।
ম্যাচ শেষে দেখা যায়, সুইজারল্যান্ডের স্ট্রাইকাররা প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছেন ১৭টি। এর মধ্যে অন শট হয়েছে ৬টি। ৪টি ফিরিয়েছেন গোলরক্ষক, একটি হয়েছে গোল, অপরটি গোল হলেও অফসাইডে ধরা পড়েন প্রতিপক্ষের স্ট্রাইকার। বাকি ১১টি শট হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট। সুইজারল্যান্ড ট্যাকল জয় করেছে ২৩টি, ফাউল করেছে ৯টি। আর বল দখলে ছিল ৬২ শতাংশ।
অপর দিকে, ইকুয়েডরের খেলোয়াড়ররা প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছেন ১০টি। এর মধ্যে অন শট হয়েছে ৪টি। ৩টি ফিরিয়েছেন গোলরক্ষক, অপরটি হয়েছে গোল। ১৭টি ট্যাকল জয়ী ইকুয়েডর ফাউল করেছে ১৫টি। আর তাদের বল দখলে ছিল ৩৮ শতাংশ।
সুইজারল্যান্ড কর্নার কিক পায় ৮টি। আর ইকুয়েডর পায় ৫টি। সুইজারল্যান্ডের ১টি অফসাইডের বিপরীতে ৪ বার অফসাইড সংকেত পেয়েছেন ইকুয়েডরের খেলোয়াড়রা।
ম্যাচে দু’টি দলই একটি করে হলুদ কার্ডখেয়েছে। একটি হজম করেছেন ইকুয়েডরের হুয়ান কার্লোস প্যারেডেস। সুইজারল্যান্ডের গোলদাতা আদমির মেহমেদীকে ফাউল করায় ৫৩ মিনিটের মাথায় তাকে কার্ড দেখান রেফারি। অপরটি খেয়েছেন সুইজারল্যান্ডের জোহান দিউরু। বদলি খেলতে নামা প্রতিপক্ষের আরিওকে ফাউল করায় ৮৪ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড হজম করতে হয় তাকে।
এর আগে, ম্যাচের শুরুতে বল দখলে অনেক পিছিয়ে থেকেও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এনার ভ্যালান্সিয়ার হেড থেকে পাওয়া দুর্দান্ত গোলে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। ২২ মিনিটের মাথায় ওয়াল্টার আইওভির করা ফ্রি কিক থেকে গোলবারের খুব কাছ থেকে হেড নেন এনার। গোলরক্ষক দিয়েগো বেনাগলিওকে বোকা বানিয়ে এনার হেড সরাসরি বলকে জালে জড়ায়।
এরপর আক্রমণ করেও কোনো গোল না হওয়ায় ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ইকুয়েডর।
১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ খেলতে নেমে শুরুতেই সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড। ৪৮ মিনিটের মাথায় রিকার্ডো রদ্রিগেজের নেওয়া একটি কর্নার শট থেকে দুর্দান্ত হেডে দলকে সমতায় ফেরান আদমির মেহমেদী। প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের একেবারে কাছ থেকে মাঝবরাবর হেড নেন মেহমেদী।
চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে, রোববার নিয়ে টানা পাঁচটি ম্যাচেই গোল করেছেন ইকুয়েডরেরর এনার। আর এ ম্যাচের তিনটি গোলের দু’টিই এসেছে হেড থেকে।
বিশ্বকাপের চতুর্থ দিনে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ব্রাসিলিয়া স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় সুইজারল্যান্ড ও ইকুয়েডর।
দলকে জয়ী করার জন্য মাঠে নামেন সুইজারল্যান্ডের পক্ষে- দিয়েগো বেনাগলিও (১), স্টেফান লিচটেইনার (২), স্টিভ ভন বারজেন (৫), জোয়েখান ইনলার (৮), গ্রানিট ঝাকা (১০), ভ্যালন বেহরামি (১১), রিকার্ডো রড্রিগুয়েজ (১৩), ভ্যালেন্টিন স্টকার (১৪), জোসিপ ডারমিক (১৯), জোহান দিউরু (২০) ও জেরডান শাকিরি (২৩)।
পরে অবশ্য, ভ্যালেন্টিন স্টকারের বদলি আদমির মেহমেদী এবং জোসিপ ডারমিকের বদলি হয়ে খেলতে নামেন হ্যারিস সেফেরোভিক। দু’জন বদলি খেলোয়াড়ই গোল করেন।
এ দলের কোচ ওটমার হিটজফ্লেড (জার্মানি)।
অপরদিকে ইকুয়েডরের পক্ষে লড়াইয়ে নামেন- আলেক্সান্ডার ডোমিনগুয়েজ (২২), জর্জ গুয়াগুয়া (২), ফ্রিকসন এরাজো (৩), হুয়ান কার্লোস প্যারেডস (৪), ক্রিস্টিয়ান নবোয়া (৬), জেফারসন মন্টেরো (৭), ওয়াল্টার আইওভি (১০), ফেলিপ কেইসেডো (১১), ইনার ভ্যালেন্সিয়া (১৩), এন্টোনিও ভ্যালেন্সিয়া (১৬) ও কার্লোস গুয়েজো (২৩)।
পরে জেফারসন মন্টেরোর বদলি জাও রোজাস এবং ফিলিপ কেইসেডোর বদলি হয়ে খেলতে নামেন মাইকেল অ্যারোয়ো।
দলটির কোচ রুয়েডা রেইনালডো (কলম্বিয়া)।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৪