ঢাকা: প্রথম ম্যাচে হন্ডুরাসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ফ্রান্স ও ২-১ গোলে ইকুয়েডরকে হারানো সুইজারল্যান্ডের চোখ এখন নক আউটে।
শুক্রবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নক আউট পর্বে জায়গা করে নিতে চায় লা ব্লুজ ও সুইসরা।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় সালভেদর শহরের অ্যারেনা ফন্তে নোভা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় খেলায় মুখোমুখি হবে বেনজামা ও গ্রানিট জাকারা।
প্রথম ম্যাচে হন্ডুরাস করিম বেনজামার জোড়া গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। এদিন দলের প্রাণভোমরা ফ্রাঙ্ক রিবেরির অভাব বুঝতে দেয়নি দলটি। সুইসদের বিরুদ্ধেও একই ধারা বজায় রাখতে বন্ধপরিকর ১৯৯৮ এর চ্যাম্পিয়নরা।
এই ম্যাচে ফ্রান্সের তুরুপের তাস বেনজামা, পল পোগবা আর অলিভার জিরুড ও ক্যাবায়েরা। এছাড়া তাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে প্রতিযোগিতামূলক কোনো আয়োজনে এখন পর্যন্ত সুইসদের বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেকর্ড।
এদিকে, এই ম্যাচ দিয়েই আরেকটি মাইলফলক ছুঁতে যাচ্ছে ফরাসিরা। ব্রাজিল, ইটালি, জার্মানি ও আর্জেন্টিনার পর পঞ্চম দেশ হিসেবে ১০০ গোল করার পথে রয়েছে ফ্রান্স। এ জন্য আর তাদের দরকার মাত্র একটি গোল।
নক আউট পর্বে যেতে ফ্রান্স অনুপ্রেরণা পেতে পারে আগের ম্যাচ থেকেও। হন্ডুরাসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৭০ শতাংশ বল দখলে রাখে ফরাসিরা। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর বল দখলে রাখায় এটি ফ্রান্সের রেকর্ড। ওই ম্যাচে দুই গোল করেন রিয়ালকে চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতানো করিম বেনজামা। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে জিনেদিন জিদানের পর দ্বিতীয় ফরাসি খেলোয়াড় হিসেবে জোড়া গোলের কীর্তি করেন বেনজামা। ফ্রান্সের জার্সি গায়ে সর্বশেষ ৭ ম্যাচে ৮ গোল তার নামের পাশে।
তবে শিষ্যদের সামর্থ্যে আস্থা রেখেও সতর্ক ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন তিনি। এ জন্য মূল একাদশে কোনো পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করছেন না।
অপরদিকে, ফ্রান্সকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত সুইসরাও। প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরকে হারিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে।
সুইসদের সোনালি প্রজন্ম হিসেবে বিবেচিত বর্তমান দলটি ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে টিম হিসেবে খেলতে চায়। দলীয় একতা দিয়েই ফরাসিদের ঘায়েল করতে চায় সুইস কোচ ভিন্ন দুই ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতানো ওটমার হিৎসফেল্ড।
প্রথম ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা পাবে সুইসরাও। প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ৬২ ভাগ বল দখলে রাখে তারা। যা ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর সুইজারল্যান্ড পক্ষে রেকর্ড।
এসব প্রেরণাকে পুঁজি করে ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়েই নক আউটে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর এই দলের যোদ্ধারা। যাদের অধিকাংশই সুইজারল্যান্ডকে অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে উঠে আসা।
এর আগে দুই দল মোট ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ বার ফ্রান্স ও ১২ বার সুইজারল্যান্ড জয় পেয়েছে। অমীমাংসিতভাবে ছিল ৯টি ম্যাচ। তবে দুই দলের শেষ ৩ ম্যাচে জয় পায়নি কোনো দলই।
ফ্রান্স স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: লরিস (টটেনহাম হটস্পার), ল্যানড্রিউ (বাস্তিয়া), মানদান্দা (মার্সেই)
রক্ষণভাগ: ডেবুশি (নিউক্যাসল), সানইয়া (আর্সেনাল), কসিয়েলনি (আর্সেনাল), সাকু (লিভারপুল), ভারান (রিয়াল মাদ্রিদ), মানগালা (পোর্তো), এভরা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), ডিয়ে (পিএসজি)।
মধ্যমাঠ: কাবায়ে (পিএসজি), গ্রেনিয়ার (লিও), মাতুইদি (পিএসজি), মাভুবা (লিলি), পগবা (ইউভেন্তুস), মোসা সিস্সোকো (নিউক্যাসল), ভালবুয়েনা (মার্সেই)
আক্রমণভাগ: বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ), জিরু (আর্সেনাল), গ্রিজমান (রিয়েল সোসিয়েদাদ), রেমি(নিউক্যাসল), রিবেরি (বায়ার্ন মিউনিখ)
কোচ: দিদিয়ের দেশম
সুইজারল্যান্ড স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: ডিয়েগো বেনাগ্লিও, রোমান বুয়ের্কি, ইয়ান সোমার।
রক্ষণভাগ: জোহান জুরু, মিশেল ল্যাং, স্টিফেন লিচেটস্টেইনার, রিকার্ডো রদ্রিগেজ, ফ্যাবিয়ান শাহের, ফিলিপ্পি স্যান্ড্রোস, স্টিভ ভন বার্গেন, রিটো জিয়েগলার।
মধ্যমাঠ: ট্রানকুইলো বারনেটা, ভ্যালোন বেহরামি, ব্লেরিম জেমাইলি, জেলসন ফার্নান্দেজ, গোখান ইনলার, জারদান শাকিরি, ভ্যালেন্টাইন স্টোকার।
আক্রমণভাগ: জোসিপ দ্রমিক, মারিও জেভ্রানোভিচ, অ্যাডমির মেহমেদি, হারিস সেফেরোভিচ, গ্রানিট জাকা।
কোচ: ওটমার হিৎসফেল্ড
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৪