ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

১৯৫০ বিশ্বকাপকেও হার মানিয়েছে ব্রাজিল

মাহবুব আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৪
১৯৫০ বিশ্বকাপকেও হার মানিয়েছে ব্রাজিল

ঢাকা: ব্রাজিলিয়ানরা কখনই চান নি মারাকানার ‘দুঃখ’ আবার ফিরে আসুক। কিন্তু বিধি বাম ধর্মভূমিতে ফিরে এলো সেই ১৯৫০ বিশ্বকাপের দুঃসহ আঘাত।

ফুটবল বোদ্ধারা বলছেন, বেলো হরিজেন্তের খেলা সেই ’৫০ কেও হার মানিয়েছে।  

দ্বিতীয়বারের মতো ঘরের মাঠে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয় দিয়ে সেই ’৫০ এ মারাকানা স্টেডিয়ামের দুঃসহ স্মৃতি মুছতে চেয়েছিলেন সাম্বার দেশের ২০০ মিলিয়ন মানুষ।

কিন্তু বেলো হরিজেন্তে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে শোচনীয় ৭-১ গোলে হার দিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। যা দেশটির ফুটবল ইতিহাসের ১০০ বছরের সবচেয়ে কলঙ্কেরও বটে!

ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের ২০তম আসর বসেছে তীর্থভূমি ব্রাজিলে। এর আগে একবারই বিশ্ব আসরের স্বাগতিক হওয়ার সম্মান অর্জন করে সাম্বার দেশ ব্রাজিল। সেটা ১৯৫০।

হাতের কাছে এসেও প্রথমবার খেতাব না-পাওয়ায় বিষাদে ডুবেছিল  কিংবদন্তি পেলের ছেলেরা। সেদিন সাম্বাদের কাঁদিয়ে ৬-০ গোলে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ঘরে তুলে নেয় এই বিশ্বকাপের ‘কামড় বয়’ খ্যাত সুয়ারেজের উরুগুয়ে।  

ম্যাচে অপমানজনক হারে ব্রাজিলের পত্রিকাগুলোও বেশ শোকাহত! ম্যাচের পরপরই দেশটির অন্যতম দৈনিক ফোলহা ডি সাও পাওলোর অনলাইন সংস্করণে শিরোনাম করে ‘ঐতিহাসিক লজ্জা’।

গ্লোবো-স্পোর্টস তাদের সংবাদ-পোর্টালে এই হারকে অভিহিত করেছে ‘চূড়ান্ত অবমাননা’ হিসেবে।

ফুটবল বিশ্লেষক জুকা ক‍ুফুরি তার ব্লগে লিখেছেন, খেলা দেখ মনে হচ্ছিল এটা প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে দৌঁড়াদৌঁড়ি হচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এতো অপমানকর খেলা আর দেখিনি।

ক্রীড়া বিশ্লেষক মাইকেল কেস্টলার বলেন, মিনেরিও আর মারকানা এক হতে পারে না। ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিল অপরাজেয় দল। কিন্তু বর্তমানে বেশ ভালোতে অবস্থান করছে দলটি।  

তিনি বলেন, এই সময়ে ফাইনালে যেতে না পারা খুবই অপমানজনক। গোলের সংখ্যাও হানিকর। তবে এটা নতুন মারকানা নয়।

পঞ্চাশে ব্রাজিল বিশ্ব আসরে অংশ নেওয়ার জন্য বেশ এগিয়ে ছিল। এরপর থেকে সাদা-কালো, ধনী-গরিব ভক্তদের ভালোবাসায় পাঁচবার বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নেয় পেলে-রোনাল্ডোর ব্রাজিল।

বর্তমানে দেশটির মহাতারকা নেইমার আহত হওয়ার কারণে সেমিফাইনালে খেলতে পারেন নি। অধিনায়ক সিলভাও বাদ পড়েছেন হলুদ কার্ডে। তাদের ছাড়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নেমেও শেষ রক্ষা হয়নি স্কলারির শিষ্যদের। যদিও ম্যাচে হারার দায় নিজের ঘাড়েই নিয়েছেন স্কলারি।

এদিকে গত বছর থেকেই বিশ্বকাপ আয়োজনের বিপক্ষে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে আসছিল ব্রাজিলে। বিশ্বকাপ আয়োজন না করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ স্কুল ও হাসপাতালে স্থাপনে ব্যয় করার দাবি ছিল তাদের।

মঙ্গলবারও হারের পর বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে। এর আগে বিশ্বকাপ শুরুর পরও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে ব্রাজিলিয়ানরা। তবে ব্রাজিল দলের জয় তাদের বেশ উল্লসিতও করেছিল।

সম্প্রতি বিশ্বকাপ নিয়ে জাতিসংঘের কনসালট্যান্ট পেড্রো ট্রেঙ্গরাস বলেছিলেন, এই বিশ্বকাপ ব্রাজিলের জন্য সত্যিকারের উপহার।

কিন্তু কম পয়েন্ট নিয়ে সেলেকাও-এর (ব্রাজিলিয়ান ফুটবল দলের নিক নেম-Selecao) কলঙ্কজনক হারের পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা হচ্ছে জয় ও হতাশার খেলা। তা কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে তা জানা নেই।

রিও ডি জেনেরিও স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ল্যামাইটন ডি কস্টা বলেন.’৫০ থেকে অনেক কাপ এসেছে ব্রাজিলের ঘরে। কিন্তু এবার হারে মারাকানার আবার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। এটা ছিল নজিরবিহীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।