ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে মেসির বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৬
আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে মেসির বিদায়

ঢাকা: আর্জেন্টিনার নিয়মিত অধিনায়ক লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন। কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরের ফাইনালে চিলির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হারের পর এমন ঘোষণা দেন ফুটবলের খুদে জাদুকর।

সাফল্যের মুকুটে কি নেই মেসির। পাঁচ পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। তার মতো ফুটবলের বিস্ময় প্রতিভা তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছেন দেশের জার্সিগায়ে। কিন্তু ক্লাবের জার্সিতে তিনি যেভাবে আয়রনম্যান ছিলেন, দেশের জার্সিতে যেন তিনিই ‘ট্র্যাজিক নায়ক’।

ব্রাজিল বিশ্বকাপে (২০১৪) দলকে একাই টেনে তুলেছিলেন ফাইনালে। জার্মানির বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হারাতে হয় বিশ্ব শিরোপা। কোপা আমেরিকার আসরে (২০১৫) স্বাগতিক চিলির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হারতে হয়েছিল মেসি বাহিনীকে। আর সবশেষ কোপার শতবর্ষী আসরে (আমেরিকার মাটিতে ২০১৬) সেই চিলির বিপক্ষে ফাইনালে আবারো টাইব্রেকারে হারের যন্ত্রণা মেনে নিতে হলো মেসিকে।

ম্যাচ শেষে মেসি জানান, ‘জাতীয় দলের হয়ে এখানেই আমার ক্যারিয়ার শেষ। ওহ, আর্জেন্টিনা। আমি আমার নিজের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা চাইছে না, তাদের জন্যও এই সিদ্ধান্ত। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো কিছু অর্জন করতে পারিনি। ’

মেসি আরও যোগ করেন, দেশের জার্সিতে আমি চারটি ফাইনাল ম্যাচ খেলেছি। এখনই সঠিক সময় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার। আবারো ফাইনালের মঞ্চে এসে হেরে যাওয়া আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমি পেনাল্টি মিস করেছি, এটা আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ’

ক্লাবের হয়ে প্রায় সব রেকর্ড নিজের করে রাখা বার্সেলোনার তারকা এই ফরোয়ার্ড দেশের জার্সি গায়ে বারবার শিরোপাবঞ্চিত হয়েছেন। আর এমন আলোচনা বন্ধ করতে মেসি চেয়েছিলেন এবারের কোপা আমেরিকার শিরোপা দেশকে পাইয়ে দিতে। ২৩ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে ফাইনালের আগে সতীর্থদের সেরাটা ঢেলে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন মেসি। বার্সার হয়ে আটবার লা লিগা, চারবার কোপা দেল রে, ছয়বার সুপার কোপা ডি এসপানা, চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনবার উয়েফা সুপার কাপ আর তিনবার ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ জেতা মেসি দেশের জার্সি গায়ে শুধুমাত্র ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা ছুঁয়েছিলেন।

ফাইনালের আগে নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতিহাস বদলে ফেলতে চেয়ে আর্জেন্টিনার নিয়মিত অধিনায়ক জানান, ‘কিছু না দেওয়ার সময় এখন নয়। আমি নিজের ইতিহাস বদলাতে চাইব এবং জাতীয় দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চাইব। এবারে শিরোপা হাতছাড়া হলে সেটি আমার জন্য টানা তৃতীয়বার ফাইনালে পরাজয় বরণ করা হবে। এটা হয়তো কোনো ব্যর্থতা হবে না, তবে খুব বেশি হতাশার হবে। ’

এক বুক হতাশা নিয়েই বিদায় নিতে হলো আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসিকে। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে একটি গোল করে সেই রেকর্ডটি গড়েন তিনি। ৫৫টি গোল নিয়ে এককভাবে শীর্ষে মেসি। স্বদেশী কিংবদন্তি স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে (৫৪ গোল) টপকে যান মেসি। আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে আসীন হতে ১১১টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। আর  বাতিস্তুতা জাতীয় দলের হয়ে ৭৮টি ম্যাচ খেলে করেন ৫৪ গোল।

২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক ঘটে ২৯ বছর বয়সী লিওনেল মেসির।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, ২৭ জুন ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।