ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

শিরোপায় চোখ দুই আবাহনীর

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৭
শিরোপায় চোখ দুই আবাহনীর ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ফুটবলের মৌসুম শুরু হয়েছে ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ দিয়ে। নানা কারণে এই টুর্নামেন্টটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ফাইনালে আসা দল দুটির জন্য। একদিকে এএফসি কাপে খেলার সুযোগের হাতছানি। অন্যদিকে শিরোপা জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মৌসুম শুরু করা।

ঢাকা আবাহনী ও চট্টগ্রাম আবাহনীর সামনেই রয়েছে এই হাতছানি। কারণ, এই প্রথম ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছে দুই আবাহনী।

মঙ্গলবার (০৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

তার আগে সোমবার (০৫ জুন) বাফুফের সভাকক্ষে ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু, অধিনায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, ঢাকা আবাহনীর কোচ দ্রাগা মামিচ ও অধিনায়ক মামুন মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের অপারেটিভ ডিরেক্টর (হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)।

উভয় দলের কোচ ও অধিনায়ক ভালো খেলে শিরোপা জয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আসতে পেরে আমরা খুশি। এই টুর্নামেন্টের আগে আমরা দেড় মাস প্রস্তুতি নিয়েছি। টুর্নামেন্টকে ওয়ার্ম-আপ টুর্নামেন্ট হিসেবে সবাই ভাবে, আমরাও ওইভাবেই চিন্তা করেছিলাম। তারপরও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আসাটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। ফাইনালটা আসলে শুধু খেলার জন্য নয়, ট্রফি জেতার জন্য। সেটা হিসেব করেই আমাদেরকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পারফরম্যান্স করতে হবে এবং আমরা প্রস্তুত। খেলোয়াড়দের মধ্যে গোলরক্ষক রানা জ্বরের কারণে খেলতে পারেনি। তার খেলার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে এলিসনও খেলতে পারেনি। আগামীকাল হয়তো খেলতে পারে। ’

ঢাকা আবাহনীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা আবাহনী ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। নিঃসন্দেহে তারা ভালো দল। দেশের সেরা দল। এএফসি কাপে তারা খেলেছে। কোচ বিভিন্ন পজিশনে তার খেলোয়াড়দের খেলিয়ে দেখতে পেরেছেন। সেটা তাদের জন্য ইতিবাচক দিক। তাদের বিপক্ষে চাপ নেওয়ার কিছু নেই। আসলে চাপ নিলে কখনোই ভালো করা যায় না। আবার একদিক দিয়ে ভালো হয়। চাপ খেলোয়াড়দের ফোকাসটা বাড়ায়। যখন খেলোয়াড়রা একটি ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করে তখন সে চাপ নেয়। সেটা তাদের ফোকাস বাড়ায়। এই দিক দিয়ে চাপটা ভালো। তবে তারা পেশাদার খেলোয়াড়। সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি আমাদের খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছি তোমরা তোমাদের জন্য খেল। ভালো খেল। ’

চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘আমরা ভালো খেলে ফাইনালে এসেছি। শিরোপা জেতার জন্যই খেলব। গ্রুপপর্বে, কোয়ার্টার ফাইনালে ও সেমিফাইনালে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা গোল পেয়েছেন। মামুনুল গোল পেয়েছেন। আমি গোল পেয়েছি। আসলে প্রত্যেক দলেই কিছু ভালো খেলোয়াড় থাকে। তারা তাদের সেরাটা খেলতে পারলে ম্যাচ জেতা যায়। গ্রুপপর্বে আরামবাগের বিপক্ষে আমরা ভালো খেলেছি। মোহামেডানের বিপক্ষে ভালো খেলেছি। শেখ রাসেলের বিপক্ষে ভালো খেলে এসেছি। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে খেলেছি। আবাহনী অনেক ভালো দল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে। ভালো খেলা উপহার দিতে আমরা প্রস্তুত। ’

ঢাকা আবাহনীর কোচ দ্রাগো মামিচ সংবাদ সম্মেলনে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তার অসন্তুষ্টির কারণ ঘিঞ্জি সূচি। ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ ছাড়াও তাদেরকে এএফসি কাপে খেলতে হয়েছে। ৫ দিনের মধ্যে তারা তিন-তিনটি ম্যাচ খেলেছে। তার মতে ফাইনালটি আরো পরে দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, তার খেলোয়াড়রা এতো বেশি ম্যাচ খেলে ক্লান্ত।  

মামিচ বলেন, ‘একটি ম্যাচের পর আর একটি ম্যাচ খেলার মাঝখানে কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা বিরতি থাকতে হয়। আমরা সেটা পাচ্ছি না। পাঁচদিনের মধ্যে তিন-তিনিট ম্যাচ খেলতে হচ্ছে আমাদেরকে। এতে আমার খেলোয়াড়রা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই ডাগ-আউটের পাশে এসে আমাকে বলছে যে কোচ আমি আর চালিয়ে যেতে পারছি না। এভাবে ফুটবল খেলা যায় না। এতে ফুটবলের উন্নতি হয় না। আমি মনে করি ভবিষ্যতে বিষয়টি নিয়ে ফুটবল ফেডারেশনের ভেবে দেখা উচিত। তারপরও ফাইনাল ম্যাচ। আমাদের খেলোয়াড়রা খেলবে। ফল কী হবে জানি না। ’

ঢাকা আবাহনীর অধিনায়ক মামুন মিয়া শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। শিরোপা ধরে রাখার চেষ্টা করব। শিরোপা ধরে রাখতেই মাঠে নামব। যদিও আমরা ক্লান্ত। কিন্তু ফাইনাল তো ফাইনালই। আমাদেরকে খেলতেই হবে। ’

পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের অপারেটিভ ডিরেক্টর (হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) বলেন, ‘আমরা গেল বছর ফেডারেশন কাপের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলাম। এবারও ছিলাম। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও ফুটবল ফেডারেশনের বিভিন্ন আয়োজনের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করব। বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে কাজ করব। এখন তো মাত্র দুটি দল। ফাইনালকে সামনে রেখে উভয় দলের জন্য শুভকামনা থাকল। আশা করছি জমজমাট একটি ফাইনাল হবে। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতাকে ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করা হবে। ’
 
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ওয়ালটন ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। রানার্স-আপ হয়েছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, ০৫ জুন ২০১৭
এমআরপি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।