ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৮
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ সংগৃহীত ছবি

সেমিফাইনালের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে হেরে যাওয়ার পর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগ খেলতে আসা বায়ার্ন মিউনিখের সামনে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না। ম্যাচ শুরু হওয়ার মাত্র ‍তৃতীয় মিনিটেই রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল জড়িয়ে যেন হিসাবটা ভালো করেই কষে আসার আভাস দিচ্ছিলেন জশুয়া কিমিখ। 

কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘রাজা’ যে রিয়াল মাদ্রিদ। ‘ইদানীং’ ফাইনাল বলতেই যে রিয়ালের নাম নেওয়া লাগে।

সেই ধারাবাহিকতায় বায়ার্ন ২ গোল দিলেও তাদের সমান সংখ্যক গোল হজম করিয়ে দুই লেগে মিলিয়ে এগিয়ে থেকে ফাইনালে চলে গেলো স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

মঙ্গলবার (১ মে) দিনগত রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বল নিয়ন্ত্রণ, পাস, অন টার্গেট ও অফ টার্গেট শটসহ সব দিকে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত রিয়ালের বিপক্ষে জিততে পারলো না সফরকারী দল। ২-২ গোলে ড্র করে নিজেদের মাঠে আগের লেগে গোল বেশি হজম করার হিসাবে বিদায় হয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে।

তবে ফাইনাল নির্ধারণী ম্যাচ বলতে যা বোঝায়, তার সবকিছুতে টইটম্বুর ছিল এই খেলা। বায়ার্নের মুহুর্মুহু আক্রমণ মাঝেমধ্যে বার্নাব্যুর গ্যালারিতে স্তব্ধতা নামালেও পাল্টা রিয়ালের আক্রমণে আরও বেশি গর্জে উঠেছে মাদ্রিদিস্তারা। বায়ার্ন ম্যাচ জয়ের জন্য সর্বাত্মক আক্রমণ চালালেও রিয়ালের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার দুই গোলের দ্যুতি শেষ হাসি হাসিয়েছে সার্জিও রামোস-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো-লুকা মডরিচ-কেইলর নাভাসদের।  

রিয়ালের ‘জয়তুল্য’ এই ম্যাচে বেনজেমার মতোই উজ্জ্বল ছিলেন নাভাস। ম্যাচে বারবার বায়ার্নের আক্রমণ ঠেকিয়ে রিয়ালকে ফাইনালের পথ দেখানোর সমান কীর্তি তারও।

ম্যাচ সবে শুরু। দর্শকরা আয়েশ করে বসে খেলা দেখা শুরু করার সুযোগও যেন পেলেন না। তৃতীয় মিনিটে কোরিন্টিন তোলিসোর শট রিয়াল অধিনায়ক রামোসকে ফাঁকি দিয়ে কিমিখের কাছে গেলে সুযোগ লুফে নেন তিনি। নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে।

তবে সমতায় ফেরার জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হলো না স্বাগতিকদের। ম্যাচের একাদশ মিনিটেই দুর্দান্ত হেডে গোল আদায় করে নেন বেনজেমা। অসাধারণ হেডে বলের যোগান দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা মার্সেলো। এরপর আরও কিছু আক্রমণ-মিসের মধ্যে রোনালদোর ছায়া হয়ে থাকাটা ছিল উল্লেখযোগ্য। পর্তুগিজ তারকা ৩৯তম মিনিটে একটা শট নিলেও সেটা চলে যায় গোলপোস্টের পাশ ঘেঁষে।

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ওই কিমিখেরই শট রিয়ালের ডি-বক্সে মার্সেলোর হাতে লাগলে পেনাল্টির জোর দাবি জানায় সফরকারীরা। কিন্তু রেফারি সেটা আমলে না নেওয়ায় ম্যাচে তখন খানিকটা উত্তেজনা ছড়ায়।

প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেরও একেবারে শুরুতেই গোল। এবার অবশ্য গোল হজম করতে হয় বায়ার্নকেই। ৪৬তম মিনিটে বায়ার্নের গোলরক্ষক সতীর্থ তোলিসোর ব্যাক পাস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে সে সুযোগ লুফে নেন বেনজেমা। রিয়াল এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। এরপর জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা যেন চেপে ধরতে চায় বায়ার্নকে।

তবে এরমধ্যেও আক্রমণাত্মক খেলা দেখা যায় থমাস মুলার-লেভানডস্কি-হামেস রদ্রিগেজদের। ৫১তম মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন একটি আক্রমণ। ৬০তম মিনিটে ফের তিনি ঠেকিয়ে দেন রদ্রিগেজের শট। অবশ্য তিন মিনিট পর ফের আক্রমণে নাভাসকে কুপোকাত করেন তার সাবেক সতীর্থ রদ্রিগেজ। প্রথমে শট নেওয়ার পর কোস্টারিকান এ গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও ফের শট নেন কলম্বিয়ান তারকা। বায়ার্ন শিবির যেন উজ্জীবিত হয়ে হয়ে ওঠে।  

কিন্তু ডাগ আউটে যে ‘চাল’ সাজাচ্ছিলেন জিদান। সেই চালে কুলিয়ে উঠতে পারেনি জাপ হেইঙ্কসের শিষ্যরা। অতিরিক্ত সময় পর্যন্তও ‘কিছু’ একটা হওয়ার আশায় থাকা বায়ার্ন সমর্থকদের হতাশায় পুড়তে হয়। রিয়ালের দুর্গে এসে ‘ড্র’ করেও তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে ‘পরাজিত’ দলের তকমা নিয়ে।

আর রিয়াল? রিয়াল যাচ্ছে কিয়েভে। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে। সেখানে ২৭ মে তাদের মুখোমুখি হবে মোহাম্মদ সালাহর উড়ন্ত লিভারপুল অথবা দুরন্ত রোমা। যে-ই আসুক, তাদের মনে রাখতে হবে, ‍রিয়াল গত দুই আসরেরও চ্যাম্পিয়ন, হ্যাটট্রিকের উচ্চাকাঙ্ক্ষা কার না থাকে?

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৩ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৮/আপডেট: ০৩৫৪ ঘণ্টা
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।