ইউরোপীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় শীর্ষ আসর ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করেছিল অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ-আর্সেনাল। দ্বিতীয় লেগে অ্যাথলেটিকোর মাঠে মুখোমুখি হয় দুই দল।
ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেত্রোপলিতানোতে আর্সেনালের গোলমুখ প্রথম উন্মুক্ত করেন কস্তা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আতোয়ান গ্রিজম্যানের বাড়ানো বল ডিফেন্সের জটলা ছাপিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। বিরতির পর গোল শোধ করতে মরিয়া আর্সেনাল সুযোগ পেয়েও গিয়েছিলো। কিন্তু, আর্সেনালের রামসি গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ হন। পরে আর কোন সুযোগই পায়নি আর্সেনাল। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের মাঠে ১-০ গোলে ম্যাচ আর ২-১ গোলে দুই লেগ মিলিয়ে পরাজয়ে শেষ হলো তাদের ইউরোপা যাত্রা। আর বিষাদে বিদায় নিলেন ওয়েঙ্গার।
ক্লাবের সাথে দীর্ঘ সম্পর্ক ছিন্ন করার সময়েও ক্লাবকে ভালো অবস্থানে দেখা হলো না ওয়েঙ্গারের। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অবস্থান ছয় নম্বরে, এফএ কাপ থেকেও বাদ। শিরোপাশূন্য একটা মৌসুম কাটবে গানারদের। শেষ ভরসা হিসেবে ছিল ইউরোপা কাপ। কোচের বিদায়টা সুখকর করে তুলতে এই শিরোপা জিততে মরিয়া ছিল পুরো আর্সেনাল। কিন্তু বিধি বাম! ফলে একরাশ কষ্ট নিয়েই ফিরতে হচ্ছে গানারদের। বিদায়টা মলিন হয়ে যাওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছেন কোচ ওয়েঙ্গার নিজেও।
১৯৯৬ সালে কোচ হিসেবে লন্ডনের ক্লাব আর্সেনালে যোগ দিয়েছিলেন ফরাসি কোচ ওয়েঙ্গার। নিজের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সেশনেই প্রিমিয়ার লিগ আর এফএ কাপের শিরোপা জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কোচিংয়ের ২২ বছরে প্রিমিয়ার লীগের তিনটি শিরোপাসহ এফএ কাপের রেকর্ডসংখ্যক সাতটি শিরোপা এনে দিয়েছিলেন তিনি। তাকে আর্সেনালের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ কোচের তকমা দেওয়া হয়েছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক কিংবদন্তী কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসনের সাথে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হতো ওয়েঙ্গারের। কিন্তু ফার্গুসনের বিদায়ের পর থেকেই কি না ক্রমেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকেন তিনি। চলতি মৌসুমে যার ছাপ আরও স্পষ্ট। প্রিমিয়ার লিগে চেলসি, ম্যানসিটি, ম্যানইউ কিংবা লিভারপুলের তুলনামূলক তরুণ কোচদের সাথে পাল্লা দিতে পারছিলেন না ওয়েঙ্গার। ফলে বিদায় নেওয়াটাই ঠিক মনে করেছেন তিনি।
বিদায়বেলায় অধরা শিরোপা জয় করতে মরিয়া ছিলেন ওয়েঙ্গার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ বা এফএ কাপের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেও ২২ বছরের দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে আর্সেনালের হয়ে ইউরোপীয় কোনো শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তার। যে বয়স তাতে আর্সেনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর আর কোনো ক্লাবের হয়ে কাজ করবেন কিনা তাতেও সন্দেহ আছে। ফলে বড় একটা আক্ষেপ নিয়েই যেতে হচ্ছে আর্সেনালের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ও দীর্ঘমেয়াদী এই কোচকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৮
এমএইচএম/এমজেএফ