ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

পরলোকে বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশ গোলরক্ষক ব্যাঙ্কস

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
পরলোকে বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশ গোলরক্ষক ব্যাঙ্কস গর্ডন ব্যাঙ্কস-ছবি: সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৬৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক গর্ডন ব্যাঙ্কস মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তার সাবেক ক্লাব স্টোক সিটি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে দলের হয়ে প্রতিটি ম্যাচেই গোলবার সামলেছেন ব্যাঙ্কস। তবে তার বড় কৃতিত্ব হিসেবে দেখা হয় ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলের দুর্দান্ত এক গোল প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেওয়ার সেই মুহূর্তকে।

১৯৭২ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় এক চোখ হারিয়ে ফেলেন ব্যাঙ্কস। এরপর থেকে কার্যত এই সাবেক লেস্টার সিটি তারকার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে। তবে ইংলিশদের ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা গোলরক্ষক হিসেবে তার নামই বারবার উচ্চারিত হয়েছে। অবসরের পরও অবশ্য চোখের সমস্যা নিয়েও তিনি কম জনপ্রিয় কিছু ক্লাবের হয়ে খেলেছেন এবিং পরে কয়েকটি ক্লাবের কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন।  

ফুটবল থেকে পুরোপুরি অবসরে যাওয়ার পর লেস্টার সিটি ক্লাবের নির্বাচকের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০০২ সালে তাকে ক্লাব প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় স্টোক সিটি।  

২০১৫ সাল থেকে কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ব্যাঙ্কস। এর ১০ বছর আগেও একবার একই রোগে আক্রান্ত হয়ে এক কিডনি হারাতে হয় তাকে। মৃত্যুকালে তিনি তার স্ত্রী উরসুলা ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।

ইংল্যান্ডের হয়ে ৭৩ ম্যাচ খেলা ব্যাঙ্কস ৬বার ফিফার বর্ষসেরা গোলরক্ষকের খেতাব ঝুলিতে পুরেছিলেন। আর ক্লাব পর্যায়ে লেস্টার ও স্টোকের হয়ে দুটি লিগ কাপ জেতার স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি।

১৯৩৭ সালে শেফিল্ডে জন্ম নেওয়া ব্যাঙ্কসের শুরুটা অবশ্য মোটেই সুখকর ছিল না। শেফিল্ডের স্কুল পর্যায়ের দল থেকে মাত্র ২ ম্যাচ খেলার পরই সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে রমার্শ ওয়েলফেয়ার ফুটবল ক্লাবের হয়ে ১৫ বছর বয়সেও দুই ম্যাচ খেলার পরই বাদ পড়তে হয় তাকে। এই দুই ম্যাচে মোট ১৫ গোল হজম করেছিলেন তিনি!

১৯৫২ সালে স্কুল ছেড়ে কয়লা খনিতে কাজ শুরু করেন ব্যাঙ্কস। এরপর ইটের ভাটায়ও কাজ করতে হয় তাকে। অনেকটা হুট করেই ফের ফুটবলে আসেন তিনি। স্থানীয় ক্লাব পর্যায়ের এক খেলায় দর্শক হয়ে উপস্থিত ছিলেন তিনি। কিন্তু এক দলের মূল গোলরক্ষক খেলার সময় গড়িয়ে গেলেও না হাজির হওয়ায় সুযোগ পেয়ে যান ব্যাঙ্কস। সেই শুরু।  

ওই ম্যাচের পারফরম্যান্স ব্যাঙ্কসকে সুযোগ করে দেয় ইয়র্কশায়ার লিগে খেলার। সেখান থেকে চেষ্টারফিল্ডের হয়ে ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে দুর্দান্ত খেলে নজর কাড়েন। পরের মৌসুমে এই দলের হয়ে মাঠে নেমে ১২২ গোল হজম করেও দলকে এফএ ইয়ুথ কাপে তুলতে ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৮ সালে তৃতীয় বিভাগ থেকে সোজা শীর্ষ লিগের ক্লাব লেস্টারে যোগ দেন তিনি। লেস্টারকে চারবার লিগ কাপের ফাইনালে তুলেন। এরপর ১৯৬৩ সালে সুযোগ পান জাতীয় দলে। বাকিটা ইতিহাস।

সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ব্যাঙ্কসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ইউরোপের নামীদামী অনেক ফুটবল তারকা ও প্রায় সব ফুটবল ক্লাব। এই তালিকায় আছেন ফুটবল গ্রেট গ্যারি লিনেকার, ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের মতো ফুটবল ব্যক্তিত্বরা। এছাড়া তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আর্সেনাল, লিভারপুল, চেলসি, লেস্টার সিটি, স্টোক সিটি, টটেনহামের মতো ক্লাবগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।