ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

ঘুরে দাঁড়াবে লিভারপুল, নাকি ফাইনালে বার্সা?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৯
ঘুরে দাঁড়াবে লিভারপুল, নাকি ফাইনালে বার্সা? বার্সেলোনা ও লিভারপুল: সংগৃহীত

স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা কতটুকু কষ্টের তা ইয়ুর্গেন ক্লপের চেয়ে কে আর বেশি জানবে! লিভারপুলের জার্মান কোচ যেন মহাভারতের মহাবীর ‘কর্ণ।’ সামর্থ্য ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও যাকে বারবার ধোঁকা দিচ্ছে ভাগ্যদেবী। 

সাবেক ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও বর্তমানে লিভারপুলের হয়ে কোচিং ক্যারিয়ারে ইউরোপ ফুটবলের সাতটি প্র্রধান ফাইনালে হেরেছেন ক্লপ। যার মধ্যে দু’বার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল।

নিঃশ্বাস দূরত্বের শিরোপাটা তার জন্য বারবার পরিণত হচ্ছে সোণার হরিণে।

চলতি মৌসুমেও ক্লপের সামনে ছিল দু’টি প্রধান শিরোপার হাতছানি। কিন্তু সময় যত গড়ালো ততোই ফিকে হতে বসলো সেই আশা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের লাগামটা এখন চলে গেছে ম্যানচেস্টার সিটির হাতে। চ্যাম্পিয়নস লিগের আশাটাও প্রায় নিভু নিভু।

গত আসরের ফাইনালিস্ট লিভারপুল এই মৌসুমেও দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে। কিন্তু শেষ চারের প্রথম লেগটা ভুলে যেতে পারলেই বাঁচেন ক্লপ। ক্যাম্প ন্যু’র প্রথম লেগে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স সত্ত্বেও ৩-০ ব্যবধানে হেরে গেছে ‘অল রেডস’রা।

মঙ্গলবার (০৭ মে) দিনগত রাতে শেষ চারের ফিরতি লেগে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে বার্সেলোনাকে আথিতেয়তা দিবে লিভারপুল। ফাইনালে যেতে হলে অলৌকিক কিছু ঘটাতে হবে ক্লপের দলকে। জিততে হবে ৪-০ ব্যবধানে। ৩-০ গোলে জিতলে দুই লেগ মিলে ব্যবধান হবে ৩-৩। তখন ভাগ্য নির্ধারিত হবে টাইব্রেকারে।  

এই মৌসুমে বার্সাকে হারানোটা প্রায় অাকাশ কুসুম চিন্তা। তাও আবার ৩-০ ব্যবধানে! কিন্তু দলটা লিভারপুল বলে এখনো আশা করা যায়। কারণ ফুটবল ইতিহাসে কামব্যাকের সবচেয়ে অনবদ্য রূপকথাটাই যে লিখেছিল অল রেডসরা!

২০০৫ সালের ইস্তাম্বুলের ফাইনাল এখনো অবিস্মরণীয় হয়ে আছে ফুটবলমোদীদের কাছে। প্রথমার্ধে এসি মিলানের বিপক্ষে তিন গোলে পিছিয়ে পড়েও দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরে লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত স্নায়ুক্ষয়ী টাইব্রেকারে জিতে শিরোপাটাও ঘরে তুলে তারা।  

ফাইনালে যেতে হলে তেমন একটি ম্যাচ উপহার দিতে হবে লিভারপুলকে। কিন্তু মহারণের আগেই দুঃস্বপ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অ্যানফিল্ডকে। চোটের কারণে ক্লপের স্কোয়াডে নেই দলের তিন প্রধান তারকা মোহামেদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো, নাবি কেইতা ও অ্যাডাম লালানা।  

সেই জায়াগায় বলতে গেলে প্রায় নির্ভার কাতালানারা। ওসমানে দেম্বেলে ও রাফিনহার চোট দুশ্চিন্তায় ফেলছে না কোচ ভালভার্দেকে। তবে চোখ রাঙাচ্ছে ইতিহাস। চ্যাম্পিয়নস লিগের গত মৌসুমেই যে তাদের পা কেটেছিল!

শেষ আটের প্রথম লেগে ইতালিয়ান ক্লাব রোমার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও সেমিতে যেতে পারেনি কাতালানরা। ফিরতি লেগে রোমান গ্লাডিয়েটররা ৩-০ গোলে জিতে দুই লেগ মিলে ব্যবধানটা করে ৪-৪। অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে শেষ চারে উঠে রোমা।  

অবশ্য বার্সার ঝুলিতেও আছে ক্যামব্যাকের গল্প। ২০১৬-১৭ মৌসুমে শেষ অাটে উঠার লড়াইয়ে পিএসজির মাঠে ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিল কাতালানরা। ফিরতি লেগে সেই প্রতিশোধ তারা নিল ৬-১ ব্যবধানে জিতে।  

সালাহ-ফিরমিনো না থাকায় লিভারপুলের আক্রমণভাগের মূল দায়িত্বটা সামলাতে হবে সাদিও মানেকে। ফিরতে পারেন সুইস তারকা জাদরান শাকিরি। ভালভার্দে অবশ্য অপরিবর্তনীয় একাদশই মাঠে নামাতে পারেন। প্রথম লেগে জোড়া গোল করা লিওনেল মেসি এবারও স্পটলাইটটা কেড়ে নিতে পারেন।  

এছাড়া এই ম্যাচ দিয়ে পুরনো ঘরে শত্রুবেশে ফিরবেন লুইস সুয়ারেজ ও ফিলিপ্পে কুতিনহো। ক্যাম্প ন্যুয়ে যাওয়ার আগে অ্যানফিল্ডেই ছিল এই দু’জনার সংসার।  

দুই দলের লড়াইয়ের পরিসংখ্যানটা এখনো চলছে সমানতালে। বিগত ৯ বারের সাক্ষাতে তিনটি জয় ও তিনটি পরাজয় আছে উভয়ের। বাকি তিন ম্যাচে কোনো ফল হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৯
ইউবি/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।