ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

বিধ্বস্ত বার্সা, ইতিহাস গড়ে ফাইনালে লিভারপুল

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৯
বিধ্বস্ত বার্সা, ইতিহাস গড়ে ফাইনালে লিভারপুল বিধ্বস্ত বার্সা, ইতিহাস গড়ে ফাইনালে লিভারপুল

প্রথম লেগে ঘরের মাঠে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বার্সেলোনা। তার ওপর আবার ‘অল রেডস’দের দুই সেরা তারকা মোহামেদ সালাহ ও ফিরমিনো ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন খেলার আগেই। সেই স্বস্তিতেই কিনা ফিরতি লেগে অনেকটা নির্ভার হয়েই শুরু করেছিলেন মেসিরা। কিন্তু এই ভুলের কি নিদারুণ পরিণতি অপেক্ষা করছিল তাদের জন্য তা হয়তো তারা কল্পনাও করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বিশ্বসেরা বার্সাকে রীতিমত উড়িয়ে ইতিহাস গড়ে ফাইনালে উঠেছে লিভারপুল।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে ৪-০ গোলে তথা দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে পা রেখেছে লিভারপুল। ২টি করে গোল করেছেন ডিভোক ওরিগি ও জর্জিয়ানো ভাইনালডাম।

হতাশাগ্রস্ত হয়ে মাঠ থেকে বেরুচ্ছেন মেসি। এই জয়ের মাধ্যমে ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় দল হিসেবে ইউরোপীয় শীর্ষ প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ৩ গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয় লেগের বীরত্বে ফাইনালে পা রাখলো ইংলিশ জায়ান্টরা। এর আগে ১৯৭০-৭১ মৌসুমে প্যানাথিনাইকোস আর ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে বার্সেলোনা একই কীর্তি গড়েছিল।

ম্যাচের মাত্র ৭ মিনিটেই গোলের দেখা পেয়ে যায় সালাহ-ফিরমিনোবিহীন লিভারপুল। অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের প্রচেষ্টা থেকে বল পেয়ে গোলবারের একদম কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন লিভারপুলের বেলজিয়ান স্ট্রাইকার ডিভোক ওরিগি। গোল খেয়ে কিছুটা গা ঝাড়া দেয় বার্সা। একটা অ্যাওয়ে গোল পেতে তখন মরিয়া বার্সেলোনা। কিন্তু মেসি-কৌতিনহোদের গোলবঞ্চিত করেন লিভারপুলের ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক আলিসন। কিন্তু প্রথমার্ধে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে দেননি আলিসন। একাই প্রায় ৪টি নিশ্চিত গোল থেকে মেসি-সুয়ারেজদের বঞ্চিত করেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল যেন আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠে। দুই মিনিটের ব্যবধানে ২ গোল করে বার্সার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেন জর্জিয়ানো ভাইনালডাম। ৫৪তম মিনিটের গোলটির পেছনে অবশ্য বার্সার ডিফেন্ডার জর্ডি আলবার ভুলই বেশি। তার ভুলেই বল পেয়ে টের স্টেগানকে পরাস্ত করেন রবার্টসনের বদলি হিসেবে নামা লিভারপুলের ডাচ তারকা । পরের গোলটি আসে জাদরান শাকিরির অসাধারণ ক্রস থেকে। ডি-বক্সে ওই ক্রিস থেকে পাওয়া বলে দুর্দান্ত হেড করে টপ কর্নার দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন ভাইনালডম। লিভারপুলের সমতায় ফেরা নিশ্চিত হয়ে যায়। ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যদের খেলা দেখে ধারাভাষ্যকারও বলতে বাধ্য হন ‘হেভি মেটাল গেম’।

৭৮তম মিনিটে বার্সার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ওরিগি। অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ডের বুদ্ধিমত্তামিশ্রিত কর্নার কিক ঠেকানোর কোনো প্রস্তুতিই ছিল না বার্সার রক্ষণের। প্রথম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রথম টাচেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে গোল করে বসেন ওরিগি। মেসি-সুয়ারেজরা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। বোকার মত তাকিয়ে রইলেন শুধু।

প্রথম লেগে জোড়া গোল করে দলকে দারুণ জয় পাইয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসি। ফিরতি লেগে চেয়ে চেয়ে দেখলেন তার অর্জন তার দলের ডিফেন্ডারদের ভুলে কীভাবে ডুবলো।

অন্যদিকে পুরো অ্যানফিল্ড তখন অবিশ্বাস্য অর্জনের আনন্দে মাতোয়ারা। সমস্বরে চলছে দলীয় সঙ্গীত ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’ আর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভাসছেন লাল তারকারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।