ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

মেসির মন জিততে পারবেন গ্রিজমান?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
মেসির মন জিততে পারবেন গ্রিজমান? মেসি ও গ্রিজমান-ছবি: সংগৃহীত

বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো বার্সার জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন লিওনেল মেসি। যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটি ড্র করেছে বার্সা, তবু দলের প্রাণভোমরাকে ফিরে পাওয়া স্বস্তি এনে দিয়েছে কাতালান শিবিরে। কিন্তু আক্রমণভাগে মেসির সঙ্গে আঁতোয়া গ্রিজমানের সমন্বয়ের অভাব দলটির ড্রেসিং রুমে একটা অস্পষ্ট অস্বস্তি ছড়িয়ে দিয়েছে।

ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার পর বরুশিয়া ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আনসু ফাতির বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। কিন্তু ম্যাচটি বার্সার জন্য হতাশা বয়ে এনেছে।

গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন যদি দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি ঠেকিয়ে না দিতেন তাহলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারতো। ম্যাচে বার্সার আক্রমণভাগকে মনে হয়েছে নখদন্তহীন। ম্যাচে আক্রমণভাগের সমন্বয়হীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো। মেসি নামার পরও বার্সার চেনা ছন্দ চোখে পড়েনি।

মেসি আর সুয়ারেস দীর্ঘদিনের জুটি ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এউ দুজনই আক্রমণভাগে গ্রিজমানের নতুন সঙ্গী। কিন্তু মেসির সঙ্গে তো নয়ই, দুই ম্যাচে জুটি বাঁধলেও দলের আক্রমণভাগের বড় তারকা লুইস সুয়ারেসের সঙ্গেও সম্পর্কের গভীরতা তৈরি হয়নি গ্রিজমানের। অবশ্য এই মৌসুমে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ থেকে ১২০ মিলিয়ন ইউরোয় বার্সায় যোগ দেওয়া গ্রিজমানের জন্য কাজটা একটু কঠিনই। কারণ, এক মৌসুম আগেও তারা ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সদস্য।  

মেসি-সুয়ারেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গ্রিজমান বলেন, ‘আমি এখানে (বার্সেলোনায়) এসেছি মাত্রই দ্বিতীয় মাস চলছে। আমাকে এই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে এবং তাদের (মেসি ও সুয়ারেস) সঙ্গে আরও বেশি ম্যাচ খেলতে হবে। আমাকে মেসি ও সুয়ারেসের মুভমেন্ট বুঝতে হবে। ’

এদিকে কিছুদিন আগে নেইমার নাটকে বার্সার ড্রেসিং রুম দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল বলে ‘ফক্স স্পোর্টস’ জানিয়েছিল। মেসির পক্ষে এক গ্রুপ, যারা চেয়েছিলেন নেইমার বার্সায় ফিরে আসুন। অন্যদিকে গ্রিজমানের পক্ষ, যারা নেইমারকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তে নাখোশ। মেসির পক্ষে ছিলেন সুয়ারেস, পিকে, আলবাদের মতো সিনিয়ররা। আর গ্রিজমানকে সমর্থন দিয়েছিলেন উসমানে দেম্বেলে, ইভান রাকিতিচ, নেলসন সেমেদোরা। তবে এই সংবাদের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক সমর্থক।

মেসি-গ্রিজমান সম্পর্ক নিয়ে অবশ্য সন্দেহের কারণও আছে। গ্রিজমান আসার পর তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত টুঁ শব্দটিও করতে দেখা যায়নি মেসিকে। তরুণ ফাতিকে নিয়ে যতটা উচ্ছ্বাস দেখা গেছে মেসির মধ্যে, গ্রিজমানকে নিয়ে তেমন কিছু দেখা যায়নি। তাছাড়া কিছুদিন আগে নেইমারকে ফিরিয়ে আনার জন্য বার্সার প্রচেষ্টা নিয়ে ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করে বিষয়টা অনেকটাই পরিস্কার করে দিয়েছেন মেসি। কারণ নেইমার যদি ফিরতেনও গ্রিজমানকে নিয়ে ঝামেলা আরও বাড়তো। কারণ একাদশে দুজনের একজনের জায়গা হতো। সেক্ষেত্রে নেইমারই হতেন প্রথম পছন্দ।

‘বন্ধু’ নেইমারকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে চেষ্টা চালিয়েছেন মেসি। বার্সাও কয়েক দফা প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। গ্রিজমানের প্রতি মেসির নাখোশ হওয়ার অবশ্য আরও একটা কারণ আছে। এই ফরাসি তারকাকে কিনতে গিয়েই তো ১২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে বার্সা। পরে নেইমারকে কিনতে গিয়ে ট্র্যান্সফার ফি নিয়েই ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। বার্সার হাতে নেইমারকে কেনার মতো যথেষ্ট অর্থ ছিল না।

তবে শেষ পর্যন্ত নেইমার পিএসজিতেই থেকে গেছেন। এরই মধ্যে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হয়ে এক ম্যাচে মাঠে নেমে গোলও করেছেন। এদিকে মেসিও বার্সার জার্সিতে ফিরেছেন। পেশাদার ফুটবলে আবেগের খুব বেশি মূল্য থাকে না। সুয়ারেসকে কিন্তু এরই মধ্যে গ্রিজমানের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিতে দেখা গেছে। ফলে তার সঙ্গে মেসির জুটি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। হয়ত এই মৌসুমে বার্সার নতুন ‘এমএসজি’ ত্রয়ী বড় কোনো চমক নিয়ে অপেক্ষা করছে। কিন্তু বন্ধুত্ব? সেটা নাহয় ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।