ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে মেসির!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে মেসির! বিমর্ষ লিওনেল মেসি/ছবি: সংগৃহীত

রোম আর অ্যানফিল্ডের দুঃস্মৃতি আবার যেন ফিরে এসেছে। তুলনামূলক দুর্বল লেভান্তের কাছে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে হেরেছে বার্সেলোনা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৩ গোল হজম করা বার্সার জন্য চলতি মৌসুমে এটি তৃতীয় পরাজয়। শুধু তাই না, লা লিগার শীর্ষস্থানও এখন হারানোর পথে কাতালানরা।  

লিওনেল মেসি আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি এমন দল চান যারা ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ে লড়াই করতে সক্ষম। কিন্তু শনিবার (৩ নভেম্বর) রাতে যা হলো তাতে বার্সা অধিনায়কের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার উপক্রম।

মেসি একক নৈপুণ্যে কিছু ম্যাচে হয়তো জয় ছিনিয়ে আনতে পারেন, কিন্তু সব ম্যাচেই তো এটা সম্ভব নয়। লেভান্তের মতো দল যদি ৩ গোল করে তাহলে এমন সম্ভাবনা তো আরও কমে যায়।

লেভান্তের বিপক্ষে প্রথমার্ধেও বার্সার খেলায় কোনো ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৪-৩-৩ ফরমেশন থেকে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সার্জিও বুসকেতসের বদলে আর্থার মেলো, জর্দি আলবাকে বিশ্রাম দিতে নেলসন সেমেদোকে লেফটব্যাক পজিশনে খেলানো কিংবা জুনিয়র ফির্পোকে বসিয়ে রাখা- আদতে বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের সব পরিকল্পনাই অসাড় প্রমাণিত হয়েছে।

বার্সার হতাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান। এই ফরাসি ফরোয়ার্ড মৌসুমের শুরু থেকেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। নিজে তো কিছুই করতে পারেননি, উল্টো তার অফসাইডের কারণে মেসির একটি গোল বাতিল হয়ে যায়। আবার ৫৬তম মিনিটে একটা হলুদ কার্ডও দেখেন তিনি। ওদিকে টানা ৪ ম্যাচ ক্লিন শিট বজায় রাখা বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের-স্টেগান রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ৫-১ গোলে জেতা ম্যাচসহ এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল হজম করলেন। দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে ৩ গোল করে বার্সাকে কার্যত জ্যান্ত গিলে নিয়েছে লেভান্তে।

বার্সার দুশ্চিন্তা বাড়ছে জেরার্ড পিকের পারফরম্যান্স নিয়েও। প্রথমার্ধে তবু কিছুটা ভালো খেলেছেন, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে লেভান্তের ৩ গোলের দুটিতেই তার পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। এই স্প্যানিশ সেন্টারব্যাকের বাজে বল ক্লিয়ারিংয়ের সুযোগ নিয়ে গোল করেন লেভান্তের কাম্পানা। দ্বিতীয়বার তিনি মায়োরালের শট ঠেকাতে ব্যর্থ হন। বার্সার ডিফেন্সের নেতা হিসেবে পিকের জন্য এমন পারফরম্যান্স হতাশাজনক।

কাতালান জায়ান্টদের জন্য আরও বড় দুঃসংবাদ লুইস সুয়ারেসের ইনজুরি। তার বদলি হিসেবে নামা কার্লেস পেরেস মেসিকে সঙ্গ দিতে পারেননি। উসমানে দেম্বেলেকে বসিয়ে রেখে আর তরুণ তুর্কি আনসু ফাতিকে সুযোগ না দিয়ে ভালভার্দে ঠিক কি প্রমাণ করতে চান সেটাই এক বড় প্রশ্ন। ফরাসি ফরোয়ার্ডের ক্ষেত্রে হয়তো সেভিয়া ম্যাচে লাল কার্ড হজম করার শাস্তি হতে পারে এটা। কিন্তু ফাতির ক্ষেত্রে? ভায়াদোলিদের বিপক্ষে মাত্র ১ ঘণ্টা খেলার সুযোগ পাওয়া ফাতিকে বসিয়ে রাখার পেছনে কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

লেভান্তে ম্যাচে বার্সার হয়ে কেউ যদি ভালো খেলে থাকেন তিনি দলপতি মেসি। সফল স্পটকিকে বার্সাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা। কিন্তু তার দল টানা ৭ ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারেনি। তার ওপর আবার তার এক গোল ভিএআর’র কারণে বাতিল হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ মেসি। বিশেষ করে কোচ ভালভার্দের কৌশলে তিনি একবারেই খুশি নন। এর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগে স্লাভিয়া প্রাগের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে কোচের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। সব দেখে-শুনে বলাই যায়, আর্জেন্টাইন জাদুকরের ধৈর্যের বাঁধ হয়তো ভেঙে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।