ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ফুটবল অনূর্ধ্ব-১৫ দলে পঞ্চগড়ের মিতু-তৃষ্ণা

সোহাগ হায়দার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
ফুটবল অনূর্ধ্ব-১৫ দলে পঞ্চগড়ের মিতু-তৃষ্ণা মিতু (বাঁয়ে) ও তৃষ্ণা

পঞ্চগড়: অনেক ছোট বয়স থেকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ রয়েছে ১৪ বছর বয়সী নুসরাত জাহান মিতু ও তৃষ্ণা রানী রায়ের।  

দুই বান্ধবী স্কুলের ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরে খেলতে যেত মাঠে।

খেলার জন্য বাড়ি থেকে বের হলে মাঝে মধ্যেই  রাস্তাঘাটে স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনতে হতো নানা সমালোচনা কথা। অন্যদিকে লোকের মুখের শোনা কথায় কিছুটা থমকে যাওয়া এ দুই খেলোয়াড়কে উৎসাহ দিয়েছেন স্থানীয় প্রশিক্ষক বিপুল। এক সময় প্রশিক্ষককেও শুনতে হয়েছে নানান কথা।

অবশেষে নিন্দুকদের মুখে কালিমা লেপে ফুটবল অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছে মিতু ও তৃষ্ণা। এবার অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৫ দলে খেলবে দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মেয়ে ও বোদা পাইলট বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এ দুই ছাত্রী।

পঞ্চগড়ের বোদা ফুটবল একাডেমির প্রশিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন বিপুল বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় দলের অংশগ্রহণকারী নুসরাত জাহান মিতু পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার রব্বানীর মেয়ে ও তৃষ্ণা রানী রায় একই পৌরসভার ভাসাইনগর এলাকার উমের রায়ের মেয়ে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বিএফএফ) থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মৌখিকভাবে তাদের দলের নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এর আগে তারা ট্রায়ালের জন্য ঢাকায় গেলে গত ২৬-২৭ অক্টোবর ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে ফেডারেশনে অবস্থান করছে, থাকবে আগামী ২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বিপুল আরো বলেন, এ পর্যন্ত আসতে তাদের অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। নানান রকম কটূক্তি হজম করে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এ জন্য তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতা ছিল। তারা সহযোগিতা না করলে আমি তাদের এ জায়গায় পৌঁছে দিতে পারতাম না।

এদিকে সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন বিপুলের কাছ থেকেই মিতু ও তৃষ্ণার এ পথ চলা। বিপুল প্রমীলা ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে। নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন বোদা ফুটবল একাডেমি। এ একাডেমিতে বালক, বালিকা উভয়ের কোচিং করানো হয়। জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে বালক ও বালিকা দল ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।

অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নুসরাত জাহান মিতুর বাবা রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, ছোট থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ ছিল মেয়ের। স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলে খেলবে। মেয়েকে খেলায় পারিবারিকভাবে যতটুকু সম্ভব সমর্থন দিয়েছি। তবে মাঝে মধ্যে মেয়েটাকে মানুষের কিছু কথা শুনতে হয়েছে। তবে আজ মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। একই কথা জানান তৃষ্ণা রানী রায়ের বাবা উমেরও।

বোদা পাইলট বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও একাডেমির উপদেষ্টা রবিউল আলম সাবুল বাংলানিউজকে বলেন, মেয়ে দু’টি আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাদের এ অর্জন আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক সুনামের। আমি চাই মিতু ও তৃষ্ণার মতো পঞ্চগড় জেলার আরও খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাক। এদিকে প্রশিক্ষক বিপুলের চেষ্টাও কম ছিল না। তার এসব কাজে সার্বক্ষণিক আমি সহযোগিতা করেছি।

এ বিষয়ে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলেমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলে মিতু ও তৃষ্ণা খেলার সুযোগ পেয়েছে। তাদের এ অর্জন এ উপজেলার সুনাম বাড়িয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বোদা ফুটবল একাডেমির খোঁজ খবর রাখি। খেলোয়াড় তৈরির ক্ষেত্রে আমার সহযোগিতা সব সময় থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।