আফগানিস্তানের তরুণী নাদিয়া নাদিম দেশ থেকে পালিয়ে একাধারে ফুটবল তারকার পাশাপাশি এবার ডাক্তারও হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের দীর্ঘ এই কঠিন পথচলায় যারা সঙ্গী হয়েছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের হেরায় নাদিয়ার জন্ম। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ আফগানিস্তানেই করেছিলেন। তার বাবা আফগান ন্যাশনাল আর্মির একজন জেনারেল ছিলেন। তবে ২০০০ সালে তালিবান নাদিয়ার বাবাকে হত্যা করে। এরপর মায়ের সঙ্গে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ১১ বছরের নাদিয়া। শরণার্থী থেকে শেষ পর্যন্ত ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পান তিনি।
এরপর ফুটবলকে আঁকড়ে নাদিয়া শুধু প্রতিষ্ঠিতই হননি, ক্রমেই হয়ে ওঠেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের মহাতারকা। একসময় প্রাণে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালানো সেই নাদিয়াই এবার প্রাণ বাঁচানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন। ফুটবল খেলার পাশাপাশি পাঁচ বছরের পড়শোনা শেষে ডাক্তারে পরিণত হলেন তিনি।
ডেনমার্কের জাতীয় দলের হয়ে এরই মধ্যে ৯৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলেছেন নাদিয়া। করেছেন ৩৮টি গোলও। ক্লাব ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ম্যানচেস্টার সিটি, প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) মতো প্রথম সারির দলগুলোতে। সব মিলিয়ে দুই শরও বেশি গোল রয়েছে তাঁর নামের পাশে। এই ফুটবল তারকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেই জানান ডাক্তারি পাস করার কথা।
নিজের ডাক্তারি ডিগ্রি পাওয়ার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা করে সম্প্রতি নাদিয়া লেখেছেন, ‘যারা প্রথম দিন থেকে আমাকে সমর্থন করেছেন এবং যাত্রাপথে যাদেরকে নতুন বন্ধু হিসেবে পেয়েছি, সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের সমর্থন ছাড়া আমার পক্ষে এটা কখনোই সম্ভব হতো না। পাশে থাকার জন্য আপনাদের কাছে চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। ’
আরো একটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, বিশ্বের ১১টি ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন এই নাদিয়া। যে নাদিয়া বাবাকে ও নিজের পুরো পরিবারকে ধ্বংস হতে দেখেছেন, আজ তিনি হয়ে উঠেছেন জীবন বাঁচানোর কারিগর। আমেরিকার ফোর্বস ম্যাগাজিন তাঁকে ক্ষমতাধর নারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরেছে।
আরো একটি চমকপ্রদ তথ্য, নাদিয়া নিজে শুধু চিকিৎসক নন, তার আরো এক বোনও নামি চিকিৎসক। আবার তার আরো দুই বোন নার্স। কিন্তু কেউই নাদিয়ার মতো পেশাদার ফুটবলারের পাশাপাশি অন্য জগতে নাম করেননি। সেদিক থেকে নাদিয়া সারা দুনিয়ার কাছে ব্যতিক্রম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
আরইউ