নিচু জলাভূমি থেকে আস্ত এক স্টেডিয়াম। সেই স্টেডিয়াম আবার যেনতেন নয়।
আজ বুধবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় এক ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের আয়োজন করে কিংস কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেশের ফুটবলের সবচেয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ এই স্টেডিয়াম সাংবাদিকদের নিয়ে পরিদর্শন করেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক, বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রোজেক্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আনোয়ারউল্লাহ এবং বসুন্ধরা গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহমুদুর হাসান তুহিন।
মাঠ পরিদর্শন শেষে ক্লাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সামনে কিংস অ্যারেনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের একটা অংশ হচ্ছে 'বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা'। এই অ্যারেনায় হোম এবং অ্যাওয়ে দুই দলের জন্যই সমান সুবিধা থাকবে। এছাড়া ম্যাচ রেফারি, ম্যাচ আয়োজক এবং বাফুফের কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে। মিডিয়ার জন্য থাকছে আলাদা স্ট্যান্ড। তাছাড়া দর্শকদের সুবিধার্থে থাকছে ফ্রি বাস সার্ভিস।
সবমিলিয়ে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে। খেলোয়াড়দের জন্য ড্রেসিংরুম, আইস বাথের ব্যবস্থা, উন্নতমানের জিমনেশিয়াম এবং কনফারেন্স রুম সবকিছু ইউরোপীয় ফুটবলের ধাচে নির্মাণ করা হয়েছে। ৮ স্তরের গ্রাউন্ডে পানি সরানোর জন্য থাকছে উন্নতমানের পানি শোষণের ব্যবস্থা। এই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে একসঙ্গে ১৪ হাজার দর্শক খেলা উপভোগ করতে পারবেন। ইংরেজি 'ইউ' অক্ষরের আদলে সাজানো হচ্ছে স্ট্যান্ড। আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে দর্শকের বসার ব্যবস্থা থাকবে। দর্শক সংখ্যা ভবিষ্যতে বাড়ানোর চিন্তাভাবনাও আছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ম্যাচ মাঠে গড়াবে। স্টেডিয়ামের অভিষেক ম্যাচে মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস ও বাংলাদেশ পুলিশ এফসি।
বাফুফের অনুমোদন পাওয়ার পর কিংসের অ্যারেনা এখন প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম ভেন্যু। যদিও মৌসুমের শুরুতে বাফুফে এই স্টেডিয়ামকে বাদ দিয়ে টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামকে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু আদতে আর্চারির জন্য নির্ধারিত এই মাঠে খেলে ফুটবলাররা ইনজুরিতে পড়া এবং অন্যান্য সমালোচনার পর সিদ্ধান্ত বদলে কিংসের অ্যারেনাকে বেছে নিয়েছে বাফুফে।
বসুন্ধরা কিংসের ঘরের মাঠ প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে ক্লাব প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান বলেন, 'পেশাদার লিগের প্রধান শর্ত হচ্ছে হোম এবং অ্যাওয়ে ম্যাচ। সব দেশের পেশাদার লিগেই এর প্রচলন আছে। হোম ম্যাচে হোম টিম কিছুটা সুবিধা তো পাবেই। আমার মনে হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন অবশেষে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আমি মনে করি, বাফুফে যে ভুলটুকু ছিল সেটা সংশোধন করেছে। ভবিষ্যতে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচও আয়োজন করা সম্ভব হবে। এমনকি বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজনও সম্ভব হবে। '
এখন পর্যন্ত বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পরের মৌসুম শুরুর আগেই বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। কয়েক মাসের মধ্যে এখানে ফ্লাডলাইটের কাজও শেষ হবে, যাতে রাতের ম্যাচ আয়োজন করা যায়। শুরু কি তাই, এখানে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে আয়োজনের পরিকল্পনা আছে ক্লাবের। এ ব্যাপারে ক্লাব প্রেসিডেন্ট বলেন, 'বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা, বসুন্ধরা কিংসের নিজস্ব ভেন্যু। শুধু উপমহাদেশেই নয়, পুরো এশিয়াতেই গুটিকয়েক ক্লাবের এমন ঐতিহ্য আছে। এটা আমাদের জন্য যেমন গৌরবের, তেমনই পুরো বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্যই এটা গৌরবের বিষয়। আশা করি, আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বাকি কাজটুকু শেষ করতে পারব। আগামী ৩-৪ মাসে মধ্যে স্টেডিয়ামের কাছ ফ্লাডলাইটসহ পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ করতে পারব। মৌসুমেই আপনারা হয়তো এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। '
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
এমএইচএম