ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফ্রান্স

কূটনী‌তিতে মন নেই ব্রাসেলস দূতাবাসের

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপ‌ন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬
কূটনী‌তিতে মন নেই ব্রাসেলস দূতাবাসের

ব্রাসেলস (বেল‌জিয়াম): কূটনী‌তিতে মন নেই বেল‌জিয়ামের ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের। অ্যাম্বাসেডর, কাউ‌ন্সিলর ও কর্মীরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।

এছাড়া অ‌নিয়ম ও দুর্নী‌তিতেও কোনো অংশে পি‌ছিয়ে নেই তারা। ফলে এখানে বসবাসরত হাজার পাঁচেক বাংলাদে‌শির কাছে দূতাবাস এক‌টি আতঙ্কের নাম।

ইউরোপের রাজধানী খ্যাত ব্রাসেলস বর্তমান বিশ্বের রাজনৈ‌তিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ নগরী। বিশ্ব কূটনী‌তিতে ব্রাসেলসের গুরুত্ব ব্যাপক। ন্যাটোর সদর দপ্তর, ইউরো‌পিয়ান ইউ‌নিয়নের সদর দপ্তর ও ইউরো‌পিয়ান পার্লামেন্টের অবস্থান ব্রাসেলসকে ইউরোপের অন্যতম ই‌তিহাস ও কূটনী‌তির আঁতুড় ঘরে প‌রিণত করেছে।

এ বিশ্বের সব রাষ্ট্র এখানে যোগ্য, সৎ ও ঝানু কূটনী‌তিক রাখলেও এসবে মন নেই বাংলাদেশের। তাই এখানে কর্মকর্তারা কেবল নিজেদের ভোগ বিলাস আর ধান্দা ফি‌কিরে ব্যস্ত বলে অ‌ভিযোগ প্রবাসীদের।

তারা জানান, এখানকার অ্যাম্বাসেডর এবং কাউ‌ন্সিলররা কেবল সরকারের কোনো মন্ত্রী, আমলা বা দলীয় নেতা এলে তাদের সামনে ব্যস্ততা দেখান। আর তারা চলে গেলে শীতনিদ্রায় যান।

অ‌ভিযোগ আছে, দূতাবাসকর্মীরা বেল‌জিয়াম ও বেল‌জিয়াম সীমান্তের কাছাকা‌ছি জার্মানিতে বসবাসরত‌ বাংলাদে‌শি প্রবাসীদের সেবা দিয়ে থাকেন। কিন্তু এই সেবা পেতে  প্রবাসীদের দিনের পর দিন কাজ ফেলে দূতাবাসে দৌড়াতে হয়। গুণতে হয় মোটা অংকের আ‌র্থিক উৎকোচ।

এছাড়া কর্মীদের বে‌শির ভাগই বি‌ভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য পেশায় জ‌ড়িত। কেউ আবার দূতাবা‌সকর্মী হয়ে শরণার্থী হিসেবে আবেদন করেছেন বলে অ‌ভিযোগ আছে। অ‌তীতে এমন ঘটনা ঘটায় বিষয়‌টি প্রবাসীদের মধ্যে আলোড়ন তুলেছে।

অন্য‌দিকে অন্যান্য অ‌ভিযোগের মধ্যে কোনো কোনো দূতাবাস কর্তার বিরুদ্ধে মানবপাচারের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া ভুয়া বিল দেখিয়ে টাকা তোলা, মা‌লি না থাকলেও ২ জন মা‌লির বেতন তোলা, একজন রাঁধুনীর বেতন তোলাসহ প্রা‌তিষ্ঠা‌নিক অনিয়মের যেনো অন্তই নেই এখানে।

প্রবাসীদের অ‌ভিযোগ, এ ধরনের অ‌নিয়মে জ‌ড়িত থাকার কারণেই আসল কাজ থে‌কে দূরে আছে দূতাবাস। এই  সুযোগ নিয়েছে সরকার বিরোধীরা। তারা ইউ‌রো‌পিয়ান ইউ‌নিয়নসহ বি‌ভিন্ন দেশের কূটনী‌তিক ও সংসদ সদস্য এবং সিনেটরদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে সব সময় সরকারকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করলেও দূতাবাসের তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই।

ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ‌টি ইমাম, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ ক্ষমতাসীনদের সবারই ব্রাসেলসে এসে বিব্রতকর প‌রি‌স্থি‌তির মোকা‌বেলা কর‌তে হ‌য়ে‌ছে।

এ বিষয়ে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে ব্রাসেলসের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউ‌ন্সিলর কাজী এহসান উল হকের সঙ্গে বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। একটানা ৫ দিন এসএমএম ও কল দিলেও তি‌নি কল ধরেন‌নি এবং এসএমএসের প্র‌তি উত্তর দেন‌নি। অনেকের অ‌ভিযোগ, স্বামী-স্ত্রী দুই জনই একই কর্মস্থলে কাউ‌ন্সিলরের কাজ করায় তারা ঠিক মতো অ‌ফিসও ক‌রেন না।

অন্য‌দিকে দূতাবাসে ফোন দিয়ে একবারের জন্যও অ্যাম্বাসেডর ইসরাত জাহানকে পাওয়া যায়‌নি। রি‌সিপশন থেকে বলা হয়, ওনারা অ‌ফি‌সে নেই। ত‌বে  অ্যাম্বাসেডরের পিও দা‌বি করা র‌ফিক জানান, ম্যাডাম অসুস্থ, তাই কয়েক দিন অ‌ফিসে আসবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬
আরএম/জেডএম

** ব্রাসেলসের আলোর উৎস(ভিডিও)
** ব্রাসেলসে প্যারিস হামলার প্রভাব
** বাংলাদেশি সব পণ্যই মে‌লে বেলজিয়ামে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।