গাইবান্ধা: মেঘমুক্ত আকাশে দিনভর সূর্যের দেখা মিললেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঝরতে থাকা কুয়াশায় রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। এতে জেলায় শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে।
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে প্রতিদিনই বাড়ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে শুধু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে শিশুসহ তিন শতাধিক মানুষ। এসময় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে চার শিশুসহ মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা সদর জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দ্বিতল ভবনের নারী-পুরুষ ওয়ার্ড রোগীতে ভরে আছে। তাদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় বেডের ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।
রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকাশে মেঘ না থাকায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যান্ত পর্যন্ত রোদ থাকায় দিনে তেমন শীত অনুভূত হয় না। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই হালকা বাতাস, আর ঘন কুয়াশার কারণে তীব্র শীত নামে। রাত যত গভীর হয় শীতের তীব্রতা ততই বাড়তে থাকে। দিন-রাতে তাপমাত্রার এই তারতাম্যের কারণেই স্বর্দি, জ্বর, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা। ফলে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বজনরা।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (এমও) ডা. শিহাব বাংলানিউজকে জানান, প্রকৃতির নিয়মে আবহাওয়া পরিবর্তিন হচ্ছে। তাই দিনে গরম ও রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। যা আমাদের অনেকের শরীরই মানিয়ে নিতে পারছে না। এটি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যমত কারণ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রত্যেককেই গরম কাপড় পরিধান, ঠাণ্ডা পানি পরিহারসহ পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার (এমও) ডা. রফিউল আলম জানান, বর্তমানে নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অর্ধশতাধিক শিশু ও বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গেল এক সপ্তাহে শিশু ও বৃদ্ধসহ প্রায় ৫ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত এক মাসে ঠাণ্ডাজনিত অসুখে চারশিশু ও এক বৃদ্ধসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ৭ ডিসেম্বর ২০২২
এমএমজেড