ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

ঢাকা: এডিস মশাবাহিত রোগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানী মহাখালীর নিপসম অডিটোরিয়ামে ‘সেমিনার অন চ্যালেঞ্জ টু প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অব ডেঙ্গু ইন বাংলাদেশ: দ্য ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এ কথা জানান।

পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা ও অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার।  

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. সামিয়া তাহমিনা বলেন, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ। মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছে। তারা জটিল রোগীদের ভর্তি করছেন না। এটি অত্যন্ত আতঙ্কের বিষয়।  

তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস সার্ভের বাইরে আমার তেমন কিছুই করতে পারি না। এর কারণ আমাদের দক্ষ জনবলের ঘাটতি। আমাদের কাজে ভুল রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগে আমাদের লার্ভিসাইটিং করতে হবে। যেন এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে পারি। কিন্তু আমাদের করা হচ্ছে ফগিং। অথচ ফগিং এডাল্ট মশা নিধনের জন্য প্রয়োগ করা হয়। তাও বর্তমান সময়ে সেটা কতটা কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।  

ডেঙ্গু প্রতিরোধে কেমিক্যালের কার্যকারিতা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. গোলাম সারওয়ার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৩০ শতাংশ এডাল্টিসাইট সফল হয়। যা আমরা ফগিংয়ের মাধ্যমে করে থাকি। মশা ইতোমধ্যে এটি প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। মশার আচরণগত পরিবর্তন হয়েছে। ফলে তার কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধের যে চিত্র দেখতে পারছি তা শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকার। সারা দেশের পরিস্থিতি কি তা আমরা জানি না। এটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় অন্তরায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশে সরকার কখনই গেজেটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেনি। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়েও বাংলাদেশে সরকারিভাবে গেজেটের মাধ্যমে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রেও তা নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র ও গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু নতুন কোনো রোগ নয়। এটি আমাদের দেশে ৬০ এর দশকে দেখা দেয়। এরপর ২০০০ সালে তা পুনরায় দেখা দেয়। যা এখন একটি বিরাট সমস্যা আকারে দেখা দিয়েছে। এটি প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি এককভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের সমস্যা নয়।

তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পাঁচ কোটির অধিক মানুষের কাছে ডেঙ্গুর সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে কমিউনিটির সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাই সচেতন হলে ডেঙ্গু মোকাবিলা সহজ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।