ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

এইচপিভি টিকাদান বিষয়ে খুলনায় জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২৪
এইচপিভি টিকাদান বিষয়ে খুলনায় জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

খুলনা: জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে এক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

‘শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট এ কর্মশালার আয়োজন করে।  

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন, কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে সরকার বিভিন্ন সময় জনহিতকর কর্মসূচি গ্রহণ করে। আর গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ সরকারের এসব কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পারে। সাংবাদিকরা জনগণের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে কাজ করে থাকেন। এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন সরকারের একটি কল্যাণকর উদ্যোগ। যার মাধ্যমে আমাদের মেয়েরা সারাজীবনের জন্য জরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে মুক্ত থাকবে। কেবল সাংবাদিক নয় বরং একজন পিতা হিসেবেও একাজে ভূমিকা রাখা আমাদের সবার কর্তব্য। টিকা গ্রহণের ইতিবাচক দিকটি সাংবাদিকরা গণমাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন।  

তিনি আরও বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সাংবাদিকরা একটি পরিবার। তাই আপনাদের কাছে আমাদের দাবি ও অধিকার থেকেই এইচপিভি টিকাদান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আপনাদের ইতিবাচক ভূমিকার প্রত্যাশা করছি।  

কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্বে প্রতি দেড় মিনিটে একজন নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে মারা যান। যাদের ৯০ শতাংশ বাংলাদেশের মতো নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের অধিবাসী। দেশে নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যানসার। বাংলাদেশে প্রতি লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং দেশে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী এ রোগে মারা যান। এইচপিভি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিভাগ ব্যতীত অন্য সাতটি বিভাগ ও সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা এলাকায় বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে, যা আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।  

এ সময় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীরা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে ওই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে। খুলনা সিটি করপোরেশন ও বিভাগের ১০ জেলায় মোট সাত লাখ ৩৯ হাজার চারশত ৯০ কিশোরীকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন লাখ ৪০ হাজার পাঁচশত ৩১ কিশোরীকে টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে।

অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনা পর্বে গণমাধ্যমর্কীরা এইচপিভি টিকা বিষয়ে যেকোন ধরনের গুজব প্রতিরোধে সক্রিয় থাকার জন্য আহ্বান জানান। একই সঙ্গে টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ গোলাম আজম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মু. বিল্লাল হোসেন খান, খুলনার সিভিল সার্জন ডা. শেখ সফিকুল ইসলাম ও জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এর এসবিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার বদরুল হাসান।  

কর্মশালায় স্বাগত জানান জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ প্রকৌশল) মো. নজরুল ইসলাম।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুর রহমান সজিব।

কর্মশালায় খুলনায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২৪
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।