ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বেড খালি তবু রোগীরা ফ্লোরে!

আবাদুজ্জামান শিমুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৪
বেড খালি তবু রোগীরা ফ্লোরে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এমনিতেই রোগীর সার্বক্ষণিক সেবা প্রয়োজন। তার ওপর যদি এমন তীব্র শীত বইতে থাকে তাহলে সেবার মাত্রা কতটুকু বাড়ানো প্রয়োজন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

অথচ এই তীব্র শীতের মধ্যে ‘রহস্যজনকভাবে’ বেড খালি রেখে রোগীদের একটি মাত্র কম্বল দিয়ে ফ্লোরে রাখছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রোববার দুপুরে ঢামেকের জরুরি বিভাগের দ্বিতীয় তলার ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পূর্ণ পরিচয়হীন রহিমা (৪০) নামে এক নারীকে ওয়ার্ডের বারান্দার ফ্লোরে একটি কম্বল দিয়ে রাখা হয়েছে।

জানা যায়, মাথায় আঘাত পাওয়ায় রোববার সকালে কে বা কারা তাকে কমলাপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে ১০টায় ঢামেকের জরুরি বিভাগের এই ওয়ার্ডে ভর্তি করে।

কিন্তু ভর্তি হওয়া রোগী হলেও তাকে কর্তৃপক্ষ একটি ব্যান্ডেজ দিয়েই বারান্দার ফ্লোরে থাকতে দিয়েছে। বাক-প্রতিবন্ধী রহিমাকে শীতে অনেক সময় কাঁপতে দেখা যায় বলেও জানান বারান্দার অন্য বেডে চিকিৎসারত রোগী ও তাদের স্বজনরা।

মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে একই কক্ষে চিকিৎসাধীন কেরাণীগঞ্জের সজীব (১২)।

তার মামা জামাল বাংলানিউজকে জান‍ান, গত শুক্রবার আমার ভাগ্নেকে (সজীব) ঢামেকে ভর্তি করি। প্রথম দিন আমাদেরও বেড দেওয়া হয়নি। ফ্লোরে থাকতে হয়েছে রোগীকে। তবে একদিন পর এক ‘ব্যক্তিকে’ ৪০০ টাকা দিলে তিনি বেডের ব্যবস্থা করে দেন।

সজীবের মামা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকে কোনো স্বজনই রহিমাকে দেখতে আসেনি। তার পক্ষ থেকে টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে এই শীতের মধ্যে এভাবে তাকে ফ্লোরে রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক রোগীর স্বজন বাংলানিউজকে বলেন, এখানে বেড পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘কতিপয় লোককে উৎকোচ’ দিতে হয়। অসহায় অথবা বোকা-সোকা ধরনের রোগী বা তাদের স্বজনদের ওপরই এ ধরনের ‘উৎকোচ’ আরোপ করে ঢামেকের অসাধু চক্র।

আরও কয়েকজন রোগীর স্বজন বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করেন, কেবল টাকা থাকলেই বেড মিলে ঢামেকের রোগীদের।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহম‍ানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বেশ উচ্চস্বরেই বাংলানিউজকে বলেন, পরিচয়হীন রোগীদের দেখভাল করার কেউ নেই। হয়তো ওই নারী রোগী বেড থেকে পড়ে গেছেন। তিনি খাট থেকে পড়ে গেলে কে দেখবে তাকে?

অন্য রোগীদের ‘উৎকোচ’ গ্রহণের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আপনারা অপরাধী ধরিয়ে দিন! আমরা অ্যাকশন নেবো!

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৪
সম্পাদনা: হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।