ঢাকা: পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় আবশ্যক ওষুধ সিলক্রিম শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে কাতরাচ্ছেন দগ্ধ রোগীরা।
শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হাসাপাতালের বার্ন ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, সারাদিনে মোট আটজন দগ্ধ রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
দুপুর তিনটার দিকে রাজধানী গুলশান-১ নম্বর সেক্টর এলাকার সিক্স সিজন হোটেলে এসি মেরামত করার সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে ঢামেক বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসেন কার্তিক ও সোহেল রানা।
তাদের সঙ্গে আসা হোটেলের নিরাপত্তাকর্মী সজীব বাংলানিউজকে জানান, দগ্ধ অবস্থায় কার্তিক আর সোহেলকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন কর্তব্যরত ব্রাদার তাদেরকে জানান, হাসপাতালের সিলক্রিম শেষ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে বাইরে থেকে না কেনা হলে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়াও সম্ভব হবে না।
এদিকে ওষুধের অভাবে হাসপাতালের ট্রলির ওপর প্রায় একঘণ্টা কাতরাতে থাকেন রোগীরা।
এর আগে রাজধানীর রামপুরা উলন রোডে একটি প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে শিক্ষকসহ দুই ছাত্রী দগ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসা নিতে আসেন।
৩য় শ্রেণির ছাত্রী আশরাফি আক্তার এবং ৭ম শ্রেণির তানজিলা আক্তারের সঙ্গে বাংলানিউজের কথা হয়।
তারা জানায়, হাসাপাতালে আসার পর কর্তব্যরত ব্রাদার বাইরে থেকে ওষুধ নিয়ে আসতে বলে। নাহলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট বার্ন ইউনিটে বর্তমানে ৪৪৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে সিলক্রিম ছাড়া এভাবেই চলছে ঢামেক বার্ন ইউনিটের চিকিৎসা সেবা।
রোগীর স্বজনদের বাইরে থেকে সিলক্রিমসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ওষুধ কিনতে বলা হয়। বাইরে থেকে ওষুধ নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে করতে একঘণ্টা পেরিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ব্রাদার তৌহিদুল বাংলানিউজকে জানান, গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে সিলক্রিম না থাকায় রোগীর স্বজনদের বাইরে ওষুধটি কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ সময়মতো কিনতে পারছেন না বলে রোগীকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। আবার যারা পর্যাপ্ত ওষুধ কিনে মজুদ রাখছেন তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে না।
রোগীদের অভিযোগের কথা স্বীকার করে হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালে কোনো দগ্ধ রোগী এলে আমাদের প্রথম কাজ ক্ষত ও আশপাশে সিলক্রিম লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া। ক্ষত শুকানো এবং যন্ত্রণা কমানোর জন্য এই ক্রিমটি ব্যবহার করা হয়। এরপরে অন্যান্য ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হয়।
‘হাসপাতালে স্যালাইন, প্যাথেডিন, গজসহ আনুষঙ্গিক সব ওষুধ থাকলেও কয়েকদিন ধরে সিলক্রিমটি নেই। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান দেশের বাইরে থাকায় ওষুধটি কেনার প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যে কারণে আপাতত রোগীর স্বজনদের বাইরে থেকে ক্রিমটি কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ’
তবে দু’একদিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৪