ঢাকা: প্রতিদিনই কোনো না কোনো নারী তার স্বপ্ন থেকে ছিটকে পড়ছেন। এক পর্যায়ে হারাচ্ছেন জীবন।
শনিবার (১০ অক্টোবর) স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবসকে সামনে রেখে দেশের নারী সমাজকে সচেতন করতে এ আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম।
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন ১৪ হাজার ৮শ ৩৬ জন নারী। আর মারা যান সাত হাজার ১শ ৪২ জন। নারী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে এ আক্রান্তের হার ২৩.৯ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১৬.৯ শতাংশ।
ক্যানসার গবেষণার দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার’র (আইএআরসি) সর্বশেষ প্রকাশিত গ্লোবোক্যান-২০১২ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা ১৫ কোটি ২৪ লাখ আট হাজার।
তাদের অনুমিত এ হিসাব ধরে প্রতিবছর সব মিলিয়ে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৭শ মানুষ নতুন করে ক্যানসার আক্রান্ত হন। আর মারা যান ৯১ হাজার ৩শ ক্যানসার রোগী। এর মধ্যে শুধু স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন ১৪ হাজার ৮শ ৩৬ জন নারী আর মারা যান সাত হাজার ১৪২ জন।
ডা. রাসকিন বলেন, নারীদের স্তন ক্যানসারের ভয়াবহতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে জেগে উঠতে হবে, জানতে হবে। শনিবার ক্যানসার সচেতনতা দিবসে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম নারীদের সচেতন করতে সারাদেশে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। টানা ২০ দিন চলবে বিভিন্ন কর্মসূচি।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং পর্যন্ত বিভিন্ন প্রচারণার পাশাপাশি জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শনিবার সকাল ১১টায় ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে স্তন ক্যানসারের বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে।
এ ছাড়া ঢাকার বাইরে ৩০টির বেশি জেলা ও কিছু উপজেলাতে সীমিত আকারে হলেও দিনটি সচেতনতামূলক আলোচনা সভা ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে পালিত হবে।
ডা. রাসকিন বলেন, স্তন ক্যানসার দেরিতে ধরা পড়ে। তা ছাড়া গ্রাম-গঞ্জ থেকে মানুষ দেরিতে আসে চিকিৎসা নিতে। আর অপারেশনের পর সুস্থ বোধ করলে কেউ আর কেমো দিতে আসেন না। এসব কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, শহরের নারীরা আর আগের মতো লজ্জাবোধ করেন না। তার পরও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। পুরুষ ডাক্তারের কাছে এখনও স্তন ক্যানসারের রোগীরা যেতে চান না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে চারজনের বেশি স্তন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ নারী চিকিৎসক রয়েছে। এ কারণে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার মতো সার্জিকাল চিকিৎসায় এক লাখ টাকার বেশি লাগে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় অপারেশনের জন্য।
আরও কর্মসূচি
৩১ অক্টোবর শনিবার সকাল ৯টায় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হবে ‘পিঙ্ক রোড শো’। গোলাপি পোশাক বা রিবন পরে যে কেউ এতে যোগ দিতে পারবেন। প্রত্যেককে খোলা পিকআপে চড়ে উত্তরা হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ করতে।
শোভাযাত্রা থামবে শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মহাখালি, কাকলি, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, জসিমউদ্দিন রোড, রাজলক্ষ্মী ও আজমপুর।
এ কাজে কোনো স্পন্সর না থাকায় প্রচারণায় সহযেগিতা দিতে নিজেই নিজের বাসস্থান, কর্মস্থল, সম্ভব হলে রাস্তার মোড়ে ও আইল্যান্ডে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এসএমএ/এসএস