অফিসে ব্যস্ত দিন, শোরগোলের বিকেলে বাচ্চাদের নিয়ে ধুন্ধুমার ঘোরাঘুরির পর মাথা আপনার ব্যথায় টনটন করবে। তখন আর কি? ওষুধের বাক্স থেকে একটা মাথাব্যথা উপসমের ট্যাবলেট খুঁজে বের করবেন সেটাইতো স্বাভাবিক।
অ্যাসথেটিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেন লিওনার্দো এই দাওয়াই দিয়ে বলেছেন, মাথাব্যথার অন্যতম কারণ কাজের চাপ, দুঃশ্চিন্তা, ক্লান্তি, কিংবা মনখারাপ থাকা। আর সাধারণত মুখমণ্ডল, ঘাড়, চোয়াল আর খুলির পেশিতে সৃষ্ট খিচুনি থেকে এটা হয়।
কোথায় ব্যথা হচ্ছে? সে প্রশ্নে অধিকাংশ রোগীই তাদের কপালের দুই দিক দেখিয়ে দেয়।
এর কারণই হচ্ছে- কপালের এক দিক থেকে মাথার পেছনের দিকে বিস্তৃত হওয়া টেমপোরালিস নামে পাখা আকৃতির একটি পেশিতে খিচুনি।
চোয়ালের পেশিতে খিচুনি হলে টেমপোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট (টিএমজি) ডিসফাংশন হয়। ঘুমের মধ্যে দাঁত কাটাও এর কারণ।
ড. লিওনার্দোর মতে, দুই পাটি দাঁতের ফাঁকে পেন্সিল চেপে ধরে রাখলে চোয়ালের পেশি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
তিনি বলেন, মানুষের শরীরের জটিল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এই চোয়াল।
উপরের চোয়ালের দুই দিকের হাড় শুরু হয় দুটি কানের গোড়া থেকে, আর নিচের চোয়ালের হার দুই দিক থেকে গিয়ে খুলির সঙ্গে মেশে। দুটি হাড় ঠিক যেখানে মেশে সেখানে একটি কার্টিলেজ ডিস্ক রয়েছে যা চোয়ালের নড়াচড়ায় ভূমিকা রাখে। বেজবল ক্যাপের আকৃতির এই ডিস্কটি যখন তার স্থান থেকে সড়ে যায়, তখনই বিপত্তি দেখা দেয়।
টানা দাঁত কাটা কিংবা চোয়ালের ওঠানামার কারণে এমনটা ঘটতে পারে। এতে চোয়ালের পেশিগুলোতে চাপ পড়ে আর তাতে খিচুনি সৃষ্টি হয়, আর তারই সূত্র ধরে ডিস্ক স্থানচ্যুত হয়।
এছাড়াও বয়সের কারণে জোড়ায় ক্ষয় হতে পারে কিংবা ভেঙ্গে যেতে পারে এতেও ডিস্ক সরে যায়। ফলে সেখানে ব্যথা হয়। কেউ কেউ মুখ খুলে হা করলেই ব্যথা পান।
ছেলেবেলায় কোনও ধরনের আঘাত পেলে সে কারণেও এমনটা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতই খারাপ হয়ে পড়ে যে অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে তা ঠিক করতে হয়। আর গুরুত্ব না দিলে এক পর্যায়ে চোয়াল স্থায়ীভাবে আটকে যেতে পারে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষের মাথা ও ঘাড়ে ৩৬ ধরনের ও অবস্থানের পেশি রয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ২০টি থেকেই মাথা ব্যথা হতে পারে।
মাথা নাড়ানো, কাধ ঝাকানো, খাদ্য গ্রহণ, কথা বলা আর মুখের অভিব্যক্তি দেওয়া এর সব কিছুর জন্যই এসব পেশির ব্যবহার চলে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
এমএমকে