ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেকে কাতরাচ্ছে ‘অজানা ছেলে’

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
ঢামেকে কাতরাচ্ছে ‘অজানা ছেলে’ ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মেঝেতে কাতরাচ্ছে ১২ বছরের এক শিশু। নাম-ঠিকানা নেই, জানা যায়নি কোনো পরিচয়।

তার ভর্তি ফাইলে শুধু লেখা ‘অজানা ছেলে’।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাতরাতে দেখাতে যায় তাকে।  

ওয়ার্ডটিতে গিয়ে দেখা যায়, নিউরোলোজি বিভাগের মেঝেতে বিছানো পাটিতে পড়ে আছে শিশুটি। পরনে কেবল নীল রংয়ের জিন্স প্যান্ট, উদাম গা। মাথার নিচে বালিশ, হাতে স্যালাইন দেওয়া। পাশেই তার গোলাপি রংয়ের শার্ট পড়ে আছে। ওই ওয়ার্ডে ভর্তি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থেকে আসা অন্য এক রোগীর স্বজন সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল থেকে শিশুটি মেঝেতে এই অবস্থায় পড়ে আছে। পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে রেখে যায়, তবে মনে হয় হাসপাতালে তার কেউ নেই বা আসেনি। হয়তো ছেলেটির বাবা-মা ঠিক জানেনই না তাদের সন্তান কোথায় আছে।

তিনি জানান, ডাক দিলে শিশুটির মুখ দিয়ে আস্তে শব্দ বের হয়। কিন্তু কথা বলতে পারে না। চোখও খুলতে পারে না।

এ বিষয়ে ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স জান্নাতুল ফেরদৌস বাংলানিউজকে জানান, বনানী থানার একজন পুলিশ সদস্য শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কোনো নাম ঠিকানা নেই, সেজন্য ভর্তি ফর্মে লেখা হয়েছে ‘অজানা ছেলে’।

রেজিস্ট্রার বই দেখে জানা যায়, ওই পুলিশ সদস্য হলেন বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীদাম চন্দ্র রায়। সেখান থেকে তার মোবাইল নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করলে শ্রীদাম বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের এক সদস্যের মাধ্যমে খবর পেয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে বনানীর ডলফিন ক্রসিং সংলগ্ন রেললাইনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।  

“মাথায় আঘাত ও মুখের ক্ষতের দাগ দেখে আমরা ধারণা করি, ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে হয়তো পড়ে আছে শিশুটি। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে শিশুটির কোনো নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। ”

ঢামেক হাসপাতালের ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু শিশুটির কেউ নেই, তাই আমরা নিজেরাই কিছু টাকা তুলে অজানা ছেলেটির চিকিৎসা করাতে চাই। যেন শিশুটি সুস্থ হয়ে বাবা-মা’র কাছে ফিরে যেতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
এসজেএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।