ঢাকা: জাতীয় নীতিমালা না থাকায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে। এতে দিন দিন অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকরিতা হ্রাস পাচ্ছে- উল্লেখ করে এখনই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে নীতিমালা করা দরকার, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর মহাখালীতে বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) কার্যালয়ে রোববার (২০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা এ মত জানান।
বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে সিআইপিআরবি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বারডেম হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আফসানা করিমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআইপিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক একেএম ফজলুর রহমান।
এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফাহমিদা বেগম, হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাকেল আখতার।
সংবাদ সম্মেলনে কি-নোট উপস্থাপন করেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবু সাইদ মো. মোসাদেক।
ডা. ফাহমিদা বেগম বলেন, আমাদের নীতিমালা না থাকায় ওষুধের দোকানগুলোতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধ করার এখনই সময়। একইসঙ্গে ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও কঠোর হতে হবে।
একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে তিনি বলেন, আগে মূত্রনালির প্রদাহে সেফ্রাডিন, অ্যামোক্সাসিলিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিলিন ওষুধে নিরাময় হতো, এখন আর হচ্ছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কারণে রেজিস্টেন্স তৈরি হচ্ছে।
রোগীর অসচেতনতাও এ ক্ষেত্রে ভূমিক রাখে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ওষুধ না খেয়েই বন্ধ করে দেওয়ায় অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
কি-নোটে জিম ও’নেইল-এর রিভিউ অন অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিসট্যান্স (এএমআর) সংক্রান্ত গবষেণা থেকে বলা হয়, বর্তমান হারে অ্যান্টিবায়োটিকের রেজিস্টেন্স বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালে এশিয়ায় ৪৭ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটবে। আফ্রিকায় ৪১ লাখ ৫০ হাজার, উত্তর আমেরিকায় ৩ লাখ ১৭ হাজার, ইউরোপে ৩ লাখ ৯০ হাজার, লাতিন আমেরিকায় ৩ লাখ ৯২ হাজার এবং ওশেনিয়ায় ২২ হাজার মানুষ মারা যাবে।
আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক শতভাগ কার্যকরিতা হারিয়েছে। দেশে ৯২ ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনা-বেচা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
এসএম/এটি