ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

কেন যাবেন ব্যাংকক হাসপাতালে

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
কেন যাবেন ব্যাংকক হাসপাতালে ব্যাংকক হসপিটাল/ছবি: ডিএইচ বাদল

ব্যাংকক, থাইল্যান্ড থেকে ফিরে: বড় কোনো অসুখ ধরা পড়লেই আমরা ঘাবড়ে যাই। তাছাড়া দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি এক ধরনের অনাস্থাও কাজ করে আমাদের মনে। কেননা প্রায়শই ভুল চিকিৎসার শিকার হই আমরা।  

একটা উদাহরণ দিই। ।

বছর চারেক আগে আমার ভাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পায়ুপথ, প্রস্রাবের রাস্তা ও মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। অবস্থা বেগতিক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। দায়িত্বরত ডাক্তাররা প্রথম দেখাতেই বলে দিলেন, নিয়ে যান। বেশিক্ষণ বাঁচবে না। এরপর বারডেম হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. আনিসুর রহমানের কাছে নেওয়া হয় তাকে।

এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে কিছুটা উন্নতি ঘটলেও এক পর্যায়ে ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নিলেন, তার লিভার স্প্লিন কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমসি ভেলোর চেন্নাই হাসপাতালে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা গেল তার বোন ম্যারোতে ক্যান্সার টিস্যু। তবে লিভার ফাংশন ভাল। তিন মাস পর কিছুটা উন্নতি হলো। এক বছর চিকিৎসার পর এখন সেই ভাই ভাল আছেন। ব্যাংকক হসপিটাল/ছবি: ডিএইচ বাদল
প্রতিনিয়তই ভুল চিকিৎসা হয় আমাদের দেশে। অনেকে হয়তো অকালে ঝরেও পড়েন। তাই সঠিক চিকিৎসা পেতে বাধ্য হয়ে অনেকেই বিদেশের হাসপাতালে ছোটেন। অন্যসব দেশের তুলনায় কম খরচে উন্নত মানের চিকিৎসা দিচ্ছে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হাসপাতাল।  

যেসকল হাসপাতালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমাহার বেশি সেখানে চিকিৎসার সফলতাও ততো বেশি। কেননা ডাক্তার যত বড় ডিগ্রিধারীই হোন, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রটি সর্বাধুনিক না হলে সমস্যা থেকেই যায়।  
 
হার্টের রোগীদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করতে ২৫৬ স্লাইস মাল্টি ডিটেকটর সিটি কার্ডিয়াক এনজিওগ্রাম মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যাংকক হাসপাতাল। যা হয়তো অনেক দেশেই নেই। সেখানে এখন থ্রিডি ইমেজ ব্যবহার করা হচ্ছে হার্টের রোগ নির্ণয়ে। ব্যাংকক হসপিটাল/ছবি: ডিএইচ বাদল

এমআরআই ৩.৫ টেসলা, ওপেন এমআরআই করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ১ মাত্রার টেসলা (টেসলা হচ্ছে ছবির রেজুলেশন)। যা থাইল্যান্ডের অন্যসব অঞ্চলের হাসপাতালেও নেই। একারণে হার্টের রোগীদের আস্থায় জায়গা হতে পারে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হাসপাতাল।
ব্যাংককের সবচেয়ে বড় বেসরকারি নেটওয়ার্ক হসপিটাল ব্যাংকক হসপিটাল। বাংলাদেশের রোগীদের জন্য সেখানে রয়েছে বিশেষ সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একজন বাংলাদেশি। ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. শক্তিরঞ্জন পাল গত ২৬ বছর ধরে হাসপাতালটিতে সেবা দিচ্ছেন।
 
ক্যান্সার নির্ণয়ে পেট সিটি ফোর্থ জেনারেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। শরীরের কোথাও ক্যান্সারের জীবাণু থাকলে এই যন্ত্রে সহজেই ধরা পড়বে। ব্যাংকক হসপিটাল/ছবি: ডিএইচ বাদল

ব্যাংকক হাসপাতালে একান্ত আলাপচারিতায় ডা. শক্তিরঞ্জন পাল বাংলানিউজকে বলেন, আমি কখনোই বলি না এখানেই চিকিৎসা নিতে হবে। একটা কথা মনে রাখা ভাল, টেকনোলজি যার যত বেশি উন্নত ট্রিটমেন্ট অ্যাকুরেসি তার ততো বেশি।

তিনি বলেন, যত বড় ডাক্তারই হোন, আমাদের এখানে তাকে প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ টি সেমিনারে অংশ নিতেই হয়। সেসব সেমিনারে বিভিন্ন বিষয় শেখানো হয়। প্রতিনিয়ত চর্চার মধ্যে থাকতে হয়।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে হাসপাতালটির বেশ সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য যান ব্যাংকক হসপিটালে। এর আর একটি কারণ বিদেশ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে বাংলাভাষা জানা লোকের অভাব নেই। ডাক্তার থেকে শুরু করে সব সহযোগিতা ব্যাংককের বাংলাদেশ মেডিকেল সার্ভিস থেকেই দেওয়া হয়। একারণেই ব্যাংকক হাসপাতালের প্রতি রোগীদের আগ্রহ একটু বেশি। ব্যাংকক হসপিটাল/ছবি: ডিএইচ বাদল১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত থাইল্যান্ডের প্রথম বেসরকারি এ হসপিটাল হার্টের রোগ ও ক্যান্সারের চিকিসার জন্য বিশেষায়িত। বাংলাদেশের জন্য রয়েছে ১৪ জন বাঙালি ডাক্তার, কর্মকর্তা। সুপরিসর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এ হসপিটালের রয়েছে তিনটি বিভাগ-- ব্যাংকক হার্ট হসপিটাল, ব্যাংকক ক্যান্সার হসপিটাল ও রিহ্যাবিলাইটেশন হসপিটাল। নিউরো, ডেন্টাল, মেডিসিন প্রভৃতি বিভাগেও রয়েছেন অভিজ্ঞ সব ডাক্তার।

ব্যাংকক হসপিটালের আরও তথ্য-সেবার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
ধানমন্ডি অফিস: ০১৯৫১১১১৮০৫, বনানী: ০১৯৫১১১১৮০১ ও চট্টগ্রাম: ০১৭৭৭৭৮২৫৫০ নম্বরে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
এসএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।