অপ্রত্যাশিত শারীরিক জটিলতায় অনেক সময় রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা দেখা দিচ্ছে। ৬জনের মধ্যে একজনকে আবার বিভিন্ন ট্রেনিং, সভা-সেমিনারসহ দৈনিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকতে হয় বলে তিনিও রোগী দেখার সময় পান না।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) দিয়ে চলছে জরুরি বিভাগের দায়িত্ব। ২৪ ঘণ্টার সেবার নিশ্চিত করার জন্য এখানে কমপক্ষে চারজন ইর্মাজেন্সি মেডিকেল অফিসার প্রয়োজন। যা একটিও নেই। গ্রামের তৃণমূল মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ৯জন ডাক্তারের কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন। তিনিও আবার চিকিৎসক সংকটের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই রোগী দেখেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্জারি, অর্থপেডিক, নাক-কান-গলা, চোখ, চর্ম ও যৌন প্রভৃতি বিভাগগুলোতে কোনো ডাক্তার আছে বলে জানা নেই। ফলে চাহিদা অনুসারে সেবা দিতে পারছে না চা বাগানবেষ্টিত এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
তবে মজার ব্যাপার হলো, এখানে দন্ত চিকিৎসক ডা. শামীম হোসেন থাকলেও তাকে সুনামগঞ্জের সাল্লা উপজেলায় নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি তার চাকরির মাসিক টাকা নিচ্ছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। কিন্তু তিনি কাজ করেন সাল্লাতে।
বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তারা হলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটু, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাহিদ পারভীন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও মেডিসিন কনসালটেন্ট (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ মহসীন, শিশু বিশেষজ্ঞ সৈয়দা মাখলুকা মুর্শেদ, মেডিকেল অফিসার ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, মেডিকেল অফিসার এবং গাইনি চিকিৎসক ডা. রোকশানা পারভীন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলার ৫০ শয্যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে ১০০ শয্যায় উন্নিত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। যা আগামী এক বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। জেলার সকলপ্রকারের সুযোগ-সুবিধা ও পদমর্যাদাভুক্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলাটির বিশেষ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে কমপ্লেক্সটিকে যদি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ১০০ শয্যায় উন্নিত করা যায় তাহলে স্থানীয় মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত হবে।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট তীব্র। আর এই সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। যে ডাক্তাররা আছেন তারা অতিরিক্ত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই এখানের চিকিৎসক সংকট দূর করা জরুরি প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, বর্হিবিভাগে প্রতিদিন ৩ শতাধিক এবং অন্তঃবিভাগে সব সময় ৫০জন রোগী নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এছাড়াও জরুরি বিভাগে দৈনিক ৭০ থেকে ৮০জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কখনো কখনো এ সংখ্যা শতাধিকে গিয়ে দাঁড়ায়।
পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং পর্যাপ্ত শয্যার ব্যবস্থা থাকলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাপক সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিতে পারতেন বলেন জানান ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
বিবিবি/এএটি