ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেড় বছরেও চালু হলো না বাগেরহাট হাসপাতালের ১৫০ শয্যা ভবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
দেড় বছরেও চালু হলো না বাগেরহাট হাসপাতালের ১৫০ শয্যা ভবন

বাগেরহাট: বছর দেড়েক আগে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও মাত্র ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কারণে চালু হচ্ছে না বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ১৫০ শয্যা ভবন। স্বাস্থ্য ও গণপূর্ত বিভাগের মধ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলীয় এ জেলার মানুষ।

বহুলকাঙ্ক্ষিত বাগেরহাট জেলার সদর হাসপাতালের ১৫০ শয্যা ভবনেও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুরোদমে হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু হলে জেলার স্বাস্থ্যসেবায় গুণগত পরিবর্তন আসবে।

বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবনের কোলঘেঁষা বাগেরহাটের প্রায় ১৭ লাখ মানুষের চিকিৎসার কেন্দ্রস্থল সদর হাসপাতাল। ১৯৯৭ সালে ৫০ শয্যা থেকে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০১৩ সালে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ওই বছরের জুন মাসে ‘হেলথ পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রিশন সেন্টার ডেভেলপমেন্ট’ প্রজেক্টের আওতায় আধুনিক চিকিৎসা উপযোগী ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও স্বাস্থ্য ও গণপূর্ত বিভাগের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় হাসপাতাল ভবনটির হস্তান্তর প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে।  

এরইমধ্যে দুই বিভাগের মধ্যে কয়েক দফা চিঠি চালাচালিও হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় ভবনটি বুঝে নিচ্ছেন না বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ।

এলাকাবাসী জানায়, নির্মাণ কাজ শেষ হলেও দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত রয়েছে ভবনটি। এটি চালু হলে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা পেতে জেলার বাইরে যেতে হবে না। দ্রুত এ ভবনে হাসপাতালের কার্যক্রম চালুর দাবি জানান তারা।

মহিবুন্নাহার নামে এক রোগীর স্বজন বাংলানিউজকে বলেন, বাগেরহাটবাসীর স্বপ্ন এ ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ভবন নির্মাণ হলেও, সেবা পাচ্ছি না। হাসপাতালটি পুরোদমে চালু হলে মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পেতো।

ওই এলাকার বাসিন্দা জামশেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, বাগেরহাটবাসীর বড় ধরনের কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসা সেবা নিতে খুলনাসহ বড় শহরে যেতে হয়। ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি চালু হলে এখানেই পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যাবে। আর দূরে যাওয়া লাগবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজির কাছে দাবি জানাচ্ছি দ্রুত হাসপাতালটি যেন চালু করা হয়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডব্লিউজেডপিডিসিএল) বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ভবন নির্মাণের সময় যে অস্থায়ী মিটারের বিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করেছে। বর্তমানে বকেয়া বিলের মিটারটি সিভিল সার্জনের নামে রয়েছে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জি কে এম সামসুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে ভবনটি বুঝে নিতে পারছি না। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।  

ভবন বুঝে নেওয়ার আগের বিদ্যুৎ বিল স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরিশোধের কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ কাজ দেড় বছর আগে শেষ হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ ভবনটি বুঝে নিচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষে তাদের অস্থায়ী মিটারের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছে। সিভিল সার্জনের নামে মিটারে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার বিষয়টি পরস্পর সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান করে দ্রুত হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।