বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার এ তথ্য বাংলানিউজকে জানান।
তার তথ্যমতে, রাজধানীতে গত ২৪ ঘণ্টা নতুন করে ২২১ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপপাতালে ভর্তি হয়েছে।
ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৪৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। ক্রমেই এই সংখ্যা কমে আসছে। একই সময়ে ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৭৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সারাদেশে মোট ভর্তি রয়েছে ৩ হাজার ৯১ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ২৮৫ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ২৫৬ জন।
রাজধানীর বাইরে সংক্রমণ বেশি হচ্ছে জানিয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. একেএম শামছুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ঢাকার বাইরে থেকে বেশি ডেঙ্গু রোগী আসছে। অর্থাৎ বর্তমানে ঢাকার বাইরে এ রোগের প্রকোপ বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আক্রান্তের হার ঢাকার বাইরে বেশি। জেলা ও উপজেলা শহরগুলোতে এখনো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আশার কথা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয়পক্ষ থেকে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা ধ্বংসে কাজ চলছে। আর থেমে থেমে বৃষ্টি না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯৭টি মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে ১০১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৬০টি ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এ সংখ্যা এখনো সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মৃত ৬০ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৫, জুলাইয়ে ২৮ এবং আগস্ট মাসে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাছাড়া এবারের ডেঙ্গুতে শিশুমৃত্যুর হারও সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে আইইডিসিআর সূত্রে। সরকারের এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মতে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মৃত্যুর ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে। যাদের মধ্যে ১২ জনের বয়স ৫ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। যা মোট মৃত্যুর ২৩ দশমিক ১ ভাগ।
ডেঙ্গুতে নিশ্চিত মৃত ৬০ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞরা জানান, ৬০ জনের মধ্যে ৪০ জনের ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম এবং ৭ জনের হেমোরেজিক জ্বর ছিল। ২৩ জনের মধ্যে এর আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসের ১১ দিনে ৭ হাজার ৫২০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। দেশে ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
এমএএম/এইচএ/