ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

একা বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের ওজন বেশি হয়!

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
একা বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের ওজন বেশি হয়!

মা-বাবার একমাত্র সন্তান ওবেসিটির শিকার হয় বেশি। অতিরিক্ত ওজন নিয়ে এরা জন্ম নেয় না বরং পরে নানা কারণে এদের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা অসম্ভব হয়ে ওঠে। যেসব সন্তানের আরও ভাই-বোন থাকে তাদের মধ্যে ওবেসিটির হার তুলনামূলক কম।

সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য।

জার্মানির ১০ হাজার স্কুল শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণা করেছেন একদল গবেষক।

তাদের গবেষণাতেও প্রাধান্য পেয়েছে ছেলে-মেয়েদের একা বেড়ে ওঠার বিষয়টি। আর অতিরিক্ত ওজনের প্রথম কারণ চিহ্নিত হয়েছে ‘ফাস্ট ফুড’ বা ‘জাঙ্ক ফুড’।

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিশারদ ড. নাটালি মুথ তার এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানান, একা বেড়ে ওঠা সন্তানদের খাদ্যাভ্যাস অন্যদের থেকে আলাদা। এসব সন্তানদের তিনি ‘সিঙ্গেলটন’ নামে অভিহিত করেছেন।

একা বেড়ে ওঠা সন্তানদের খাদ্যাভ্যাস থাকে অন্যদের চেয়ে আলাদ।  ছবি: সংগৃহীত

নাটালির মতে সিঙ্গেলটন বাচ্চারা প্রচণ্ড একরোখা, বদরাগী, জ্বেদী হয়। তাদের যেহেতু কারও সঙ্গে নিজের খেলনা বা খাবার ভাগাভাগি করার প্রয়োজন হয়না তাই এরা তুলনামূলক অন্য বাচ্চাদের চেয়ে স্বার্থপর হয় অনেক বেশি। মা-বাবার পুরো মনোযোগ ও আদর নিয়ে বেড়ে ওঠায় তারা যথেষ্ট স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে থাকে। এবং নিজের অজান্তেই এসব বাচ্চারা ফাস্টফুড খাবারে আগ্রহী বেশি থাকে কারণ আবদার পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতভাগ।

একই গবেষণায় বলা হয়েছে একা বেড়ে ওঠা বাচ্চারা আবার অনেক বেশি মেধাবী হয়ে থাকে। এরা চমৎকার ব্যক্তিসত্ত্বার অধিকারী হয় এবং আত্মবিশ্বাসের মাত্রাও প্রবল হয়ে থাকে। যে কারণে এদের অহমিকাবোধও প্রবল হয়।

অন্যদিকে, যেসব বাচ্চাদের ভাই-বোন থাকে তারা ভাগাভাগি করতে শেখে ছোট থেকেই। আর এসব পরিবারেও বাইরের খাবারের চেয়ে বাসায় তৈরি খাদ্যে বেশি জোর দেওয়া হয়ে থাকে। পাশাপাশি আবদারের ক্ষেত্রেও একজনেরটা মানা হলে অপরজনেরটা সেই মুহূর্তে না মেনে নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। তাই সিঙ্গেলটনের চেয়ে বাইরের খাবারে এদের আসক্তি কম থাকে।

প্রতীকী ছবি।

চীনের ‘এক বাচ্চা নীতি’ প্রয়োগের পর দেখা গেছে দেশটিতে আগের তুলনায় শিশুদের ওবেসিটির হার অন্তত ৭ শতাংশ বেড়েছে। আর কর্মব্যস্ত জীবনে মায়েরা শিশুদের ক্ষুধা নিবারণে বাড়তি খাবার হিসেবে রেডি ফুড দিয়ে থাকেন। এটি বাচ্চাদের ওজন বাড়ার বড় একটি কারণ।

আধুনিক সময়ে শারীরিক পরিশ্রমের খেলার থেকে ইন্টারনেট গেমে আসক্তি বেশি বাচ্চাদের। সিঙ্গেলটন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও প্রকট। শরীর খাদ্য গ্রহণ করছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিন্তু সেই বাড়তি শক্তি ক্ষয় হচ্ছেনা শারীরিক কসরতের অভাবে।

একসময় ওবেসিটিকে রোগ হিসেবে দেখা হতো না। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও শরীর পরিচর্যার মাধ্যমে কমিয়ে আনা হতো ওজন। অথচ এখন বাড়তি মেদ কমাতে অপারেশনেরও দরকার হয়ে পড়ছে। এটি হুমকিস্বরূপ বলেই মনে করছেন গবেষকরা।

ওজন কমানোতে শারীরিক নয় বরং বেশি প্রয়োজন মানসিক ইচ্ছাই। শিশুদের ছোট থেকেই খাদ্যাভ্যস ও স্বাস্থ্য সচেতনায় আগ্রহী করে তুললে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে না বলেই মত বিশ্লেষকদের।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
কেএসডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।