তিনি বলেছেন, আপনারা সুন্দর কাজ করছেনে। তথ্য দিচ্ছেন।
সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রতি এ আহ্বান জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের চিকিৎসার কোনো অভাব নাই। টেস্ট কিটও রয়েছে। যা পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট ব্যবহার করছি। এসব তথ্য দিলেই মানুষ আশ্বস্ত হবেন। এই তথ্যগুলো দিবেন। আর আপনারা সেই কাজটি করেও যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল ছাড়াও সরকারিভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে ২০০ ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) চালু করা হয়েছে। এখানে ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাসহ ভেন্টিলেশন মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
করোনা মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১১ টি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছি। আরো ১৭ টি ল্যাব স্থাপন করা হবে। আমরা পরীক্ষার পরিধি বাড়িয়েছি। আমি লক্ষ্য করেছি, কিছু কিছু জায়গায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পরীক্ষার হার খুবই কম। লোকজন পরীক্ষার জন্য আসছে না।
চিকিৎসক-নার্সদের সুরক্ষার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জমাদি) দিয়েছি। আরো পিপিই দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা পিপিই ব্যবহার করছেন- তাদের প্রতি বলছি, আপনারা যেন এটি যথাযথভাবে ব্যবহার করেন। এগুলো যেন নষ্ট না হয়। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
করোনা চিকিৎসায় চিকিৎসকদের ভূমিকার প্রশংসা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের ডাক্তার-নার্সরা ভালো কাজ করছেন। প্রাইভেট চিকিৎসকেরাও ভালো করছেন।
‘তবে কিছু কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে যে, প্রাইভেট চেম্বারে রোগীরা ডাক্তার পাচ্ছেন না। চেম্বার বন্ধ আছে। ডাক্তার কম আছে। আমি চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান করবো, আপনারা যার যার কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করেন। ’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার বাইরে আমরা কাউকে রাখবো না। সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধিসহ নিয়ম-কানুনও মেনে চলতে হবে।
পড়ুন>>আমাদের দেশ এখন ভালো আছে, নিরাপদে আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। আমরা তাই ভালো ব্যবস্থা করতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত যে কাজগুলো হয়েছে তুলনামূলকভাবে ভালো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করে চলেছি।
চলমান পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় দেশের নানা প্রান্তের বিত্তশালী ও প্রবাসীদের প্রতি ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এর আগে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশের করোনা পরিস্থিতর সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে ৪ হাজার ৭২৫টি কল এসেছে। এর মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ছিল ৩ হাজার ৯৯৭ টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৩৩৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫৩ জনের। এর মধ্যে নতুন করে একজনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তিনি নারী, তার বয়স ২০ বছর।
এছাড়া সুস্থ হয়ে আরও চারজন বাড়ি ফিরে গেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন একজন চিকিৎসক ও নার্স। এ নিয়ে সব মিলিয়ে মোট ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ৮০ বছরের একজনও রয়েছেন। এছাড়া আরও দুইজন রয়েছেন যাদের বয়স ৬০ বছর।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এমআইএস বিভাগের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এসএম আলমগীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
পিএস/এমএ