ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনায় মৃত্যু হলে নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২০
করোনায় মৃত্যু হলে নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন

ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, যাদের করোনা ভাইরাস (কােভিড-১৯) পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে তাদের মৃত্যুর পর দাফন করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী। আমরা যে গাইডলাইন তৈরি করেছি তার দাফন করা হবে সেই গাইডলাইন অনুসরণ করে। 

তিনি বলেন,  আর করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে যারা বিভিন্ন রোগে মারা গেছেন, যাদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে তাদের সাধারণ মৃত্যু। তাদের সাধারণভাবেই দাফন করা হবে।

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিক রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস মিলনায়তনে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা রোগটা কোনো অচ্ছুৎ রোগ নয়। তার শরীরে ভাইরাস ঢুকেছে। এ ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, নাও দিতে পারে। তিনি সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। কাজেই এটা এমন কোনো বিষয় না।

তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, অথবা যে কেউ যদি মারা যান তখন একটা শোকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমরা এটা মানতে পারি না। এ মুহূর্তে আমরা যদি সৎকার করতে বাধার সৃষ্টি করি অথবা ওই ধরনের অপবাদ দেই। সেটা ঠিক নয়।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবেই ২ হাজার ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যুর মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ মৃত্যু হয় অসংক্রামকজনিত রোগে। পাশাপাশি অনেক জটিলতা, সড়ক দুর্ঘটনা, মাতৃত্বজনিত সমস্যা, শিশুদের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় মৃত্যু হয়। ২৪ ভাগ মানুষের বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়। অনেক মানুষের মৃত্যু এখনই এ কারণেই হচ্ছে। হঠাৎ করে করোনার জন্য মৃত্যু সংখ্যা বাড়েনি।  

তিনি বলেন, আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ আছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। বেশি বেশি পরীক্ষা করলে করোনা সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে।

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ কথা সত্য, হঠাৎ করে করোনার কারণে আমাদের মৃত্যু ৩‌ হাজার বা ৪ হাজারে বৃদ্ধি পায়নি। এ জিনিসটা আমরা খতিয়ে দেখছি। কাজেই সাধারণ মানুষকে একটা জিনিস বলবো, যেকোনো ধরনের মৃত্যু, করোনাজনিত মৃত্যু নয়। আমরা যেহেতু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছি, আমরা চেষ্টা করবো। যাদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের যত দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের ডাক্তাররা বােঝেন কোনটা করোনা হতে পারে। কোনটা করোনা হাতে পারে না। ‌ চিকিৎসকরা যেটা বলবেন সেটা সাধারণ মানুষ যেন বিশ্বাস করেন।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৩টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে আইইডিসিআর ১২৬টি পরীক্ষা করেছে। এছাড়া বাকি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ৩৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনের নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ৫ জনের মধ্যে আইইডিসিআরে দুইজন বাকি তিনজন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে শনাক্ত হয়েছে। যেহেতু নতুন ল্যাবে ৩ জন‌ শনাক্ত হয়েছে সেহেতু আমরা কিছু যাচাই-বাছাই করবো।

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মোট ৬১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। ‌ মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ জন। আমাদের কাছে চিকিৎসাধীন আছেন ২৯ জন । এদের মধ্যে ২২ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি সাতজন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে আইসোলেশন আছে ৮২ জন।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ঢাকার মধ্যে ৯টি পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও ৫টি স্থাপন করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। পরীক্ষাও চলছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রত্যেকটি বিভাগে পিসিআর মেশিন স্থাপন করতে পারবো। এপ্রিল ‌শেষ হওয়ার আগেই অন্তত ২৮টি প্রতিষ্ঠানে পিসিআর স্থাপন করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন ল্যাবে কিট পাঠানোর পরও ৭১ হাজার কিট আমাদের কাছে মজুদ আছে। প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন= রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২০
পিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।