ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৬ চিকিৎসক-স্টাফের করোনা, দায়িত্ব নিচ্ছে না ইমপালস হাসপাতাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
৬ চিকিৎসক-স্টাফের করোনা, দায়িত্ব নিচ্ছে না ইমপালস হাসপাতাল

ঢাকা: তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চার চিকিৎসক ও দু’জন ওটি স্টাফসহ ছয়জনের করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত হাসপাতালের রোগীদের সেবা দিলেও বিপদে সেই চিকিৎসক-স্টাফদের দায়িত্ব নিচ্ছে না ইমপালস কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) রাতে আক্রান্ত একজন ডাক্তার বাংলানিউজের কাছে এ অভিযোগ করেন।  

পরে ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডাক্তার খাদিজা জুমা বাংলানিউজকে তাদের চার চিকিৎসক ও দুই ওটি স্টাফ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ইমপালস হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রথমে করোনা আক্রান্ত হন। তার স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি সরকারি একটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।  

হাসপাতাল থেকে ফোনে ওই চিকিৎসক বাংলানিউজকে বলেন, গত ৮ এপ্রিল সবশেষ ইমপালস হাসপাতালে ডিউটি করি। এরপর ১০ তারিখে হাসপাতালে যাওয়ার কথা থাকলেও জ্বর ও কাশি থাকায় যেতে পারিনি।

‘আমাদের গাইনি বিভাগে একজন রোগীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখতে পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছিলাম। রোগীও চাচ্ছিলেন এই হাসপাতাল থেকে চলে যেতে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেয়নি। এ অবস্থায় আমরা কাজ করেছি। ’

তিনি বলেন, আমাদের বিভাগে ১২ জন ডাক্তার, পাঁচজন নার্সসহ অনেকে নিজ উদ্যোগে কোভিড-১৯ টেস্ট করিয়েছি। সেখানেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। ১২ তারিখে আমার পরীক্ষার রেজাল্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি হাসপাতাল থেকেই আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার কোনো খবরতো নেয়নি, বরং আমার স্বামীর কাছ থেকে আক্রান্ত হয়েছি বলে জানায়। প্রকৃতপক্ষে আমি আক্রান্ত হওয়ার পর স্বামীরও টেস্ট করানো হয়েছে, উনি সুস্থ আছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. খাদিজা জুমা বাংলানিউজকে বলেন, গাইনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আগেই আক্রান্ত ছিলেন। ওনার সংস্পর্শে এসে আরো তিনজন চিকিৎসকসহ ছয়জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের সংস্পর্শে আসা আরো ৫০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

‘আমাদের হাসপাতলে ৬৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন। এর মধ্যে বর্তমানে কাজ করছেন ২৫০ জন। গাইনি বিভাগের ওই চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পর আরো বেশ কিছু বিভাগ আমরা লকডাউন করেছি। বর্তমানে আইসিইউ, সিসিইউ ও জরুরি বিভাগের সেবা চালু আছে। ’

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকে অভিযোগ করতে পারে। আমাদের যেটুকু করার সেটুকু আমরা করছি। আমরা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গত মাসের বেতনসহ সব সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। এই মাসে কোনো রোগী নেই। রোগীর ওপর ভিত্তি করে আমাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্ণয় করা হয়। এই মাসের বেতন আমরা দিতে পারবো কিনা সেটাও নিশ্চিত নয়। আমাদের যেটুকু দায়িত্ব ছিল আমরা সেটুকু পালন করতে চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
পিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।