শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নার্সদের এক সংগঠনের নেতা বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার চিত্র নার্সদের থেকে কেউ বেশি জানে না। হাসপাতালের ভেতরের খবর বাইরে কারো সঙ্গে শেয়ার না করা যায় সেজন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সংগঠনের নেতারা বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। আমাদের বিশ্বাস এটা সমাধান হবে।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশের মধ্যমে বলা হয়েছে, ‘নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের আওতাধীন সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে জনসম্মুখে, সংবাদপত্রে, বা অন্য কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা, বিবৃতি বা মতামত না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। ’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, এটা কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়নি। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিবিধি তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি থেকে বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান বাংলানিউজকে বলেন, কথা বলার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। এটা কখনোই খর্ব করা উচিত নয়। সংবিধানের ধারা-৩৯ এর ১ ও ২ এ উল্লিখিত বিষয়গুলো মেনে যে কেউ যেকোনো কোনো কথাই বলতে পারে।
তিনি বলেন, শুধু নার্স নয়, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশেষ করে সুযোগ-সুবিধা ও অসুবিধার কথাও বলতে পারে। এতে দোষের কিছুই নেই। এটা অধিদপ্তর কিংবা সরকারের উচিত হয়নি।
নার্সেদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা জানান, দেশে ৫৪ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন ২৮ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কর্মরত ছিলেন ২৬ জন।
সরকারি-বেসরকারি এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন ২৫০ থেকে ৩০০ নার্স কোয়ারান্টিনে আছেন। এছাড়া এই সংকটপূর্ণ মুহূর্তে হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা, নার্সদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা অপ্রতুল থাকায় কেউ মুখ ফুটে কোনো কথা বলতে না পারে। সেজন্য মুখ বন্ধ করতে স্বাস্থ্যঅধিদপ্তর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২০
পিএস/এএটি