ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে ম্যালেরিয়ায় মারা যায় এক শিশু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে ম্যালেরিয়ায় মারা যায় এক শিশু বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে ম্যালেরিয়ায় মারা যায় এক শিশু।

ঢাকা: গত বছর বিশ্বে ২২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৫ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছেন। বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে একজন শিশু ম্যালেরিয়ায় মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউ) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্ব ম্যালেরিয়া রিপোর্ট-২০১৯ থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়‌।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বমোট ১৭ হাজার ২২৫ জন ও মৃতের সংখ্যা ছিল ৯ জন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে ৫৩২ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২০৩ জন, মার্চ মাসে ৯৪ জন পাওয়া গেছে। এছাড়া চলতি বছরে ৮২৯ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে কোনো মৃত্যু হয়নি। গত বছরে প্রথম তিন মাসে ৬০৪ জন শনাক্ত হয়েছিল।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আমি করবো ম্যালেরিয়া নির্মূল’। দিবসটি সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, ম্যালেরিয়া রোগীর মধ্যে পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় ৯১ শতাংশ রোগী পাওয়া যায়। বান্দরবনের সাতটি উপজেলার মধ্যে আলীকদম ও থানচিতে ৫০ শতাংশ রোগী রয়েছে। রাঙামাটিতে ১০টি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়িতে ৭৮ শতাংশ রোগীর পাওয়া গেছে। দুই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি রোগী রয়েছে। এছাড়া খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও লক্ষ্মীছড়িতে রোগীর দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কক্সবাজারের রামু ও চকরিয়া উপজেলার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এরপরে ময়মনসিংহ অঞ্চলের চারটি জেলা এবং সিলেটের একটি জেলার অবস্থান।


জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার (পিএম) ডা. আফসানা আলমগীর খান বলেন, বিগত এক দশকে বিশ্বে আক্রান্তের হার ২০ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৯ শতাংশ ও মৃত্যু ৭৬ শতাংশ কমেছে।


তিনি বলেন, ১৩টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূলে কাজ চলছে। গত বছরে দেশে দেড় কোটি মানুষকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রামীণ জনপদে ৮০ শতাংশ মানুষকে সেবা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ও সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সারাদেশে ম্যালেরিয়া নির্মূলে কাজ চলমান রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলের অধ্যাপক ডা. শাহ নীলা ফেরদৌসী বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে ম্যালেরিয়ার রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা করেছে।

ম্যালেরিয়া প্রবণ দেশে মোট ১৩ জেলার মধ্যে উচ্চ ম্যালেরিয়া প্রবণ তিন পার্বত্য জেলা- রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলাতেই মোট রোগীর ৯১ শতাংশই পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলের চারটি জেলা, ২০২৫ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সিলেটে চারটি জেলা, সর্বশেষ ২০৩০ সালের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূলে পর্যায়ক্রমে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।


তিনি বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ম্যালেরিয়া মুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
পিএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।