ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা নিয়ে দেশের ৯১ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ উদ্বিগ্ন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
করোনা নিয়ে দেশের ৯১ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ উদ্বিগ্ন ছবি প্রতীকী

ঢাকা: বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি নিয়ে ৯১ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ উদ্বিগ্ন। ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা অনিদ্রায় ভুগছেন, ৭১ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা এ পরিস্থিতিতে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ এবং ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা ভবিষ্যত নিয়ে হতাশা ও শঙ্কার কথা উল্লেখ করেছেন।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির এক যৌথ সমীক্ষায় এই চিত্র উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে রাজধানীর শ্যামলীর খিলজি রোডে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সংমিশ্রিত এবং স্বপ্রণোদিত অনলাইন জরিপ পরিচালনা করা হয়। যেখানে ১০ হাজার ৯০০ জন উত্তরদাতাদের মধ্যে ১০ হাজার ৬৬০ জন উত্তরদাতা প্রশ্নপত্র যথাযথভাবে সম্পন্ন করেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’ ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির ‘স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ বিভাগের উদ্যোগে সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ১০ হাজার ৬৬০ জন উত্তরদাতাদের মধ্যে পুরুষ ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ, নারী ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য রয়েছেন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। এদের ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছর এবং ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন কর্মে নিযুক্ত ছিলেন। বেশিরভাগ উত্তরদাতা (৩৩ দশমিক ৯) শতাংশ ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা।

সামগ্রিকভাবে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের ৮০ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের সঙ্গে থাকছেন এবং তাদের মতে সংকটকালে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করার কারণে তারা কিছুটা হলেও স্বস্তিবোধ করছেন। এছাড়া উত্তরদাতাদের মধ্যে ১ হাজার ১৮৫ জন উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে তারা ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে সক্ষম হয়েছেন এবং এরমধ্যে ২৯ দশমিক ২০ শতাংশ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।

এ জরিপে আরও উঠে এসেছে, ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতাদের মতে এ মহামারি পরিস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে তারা আতঙ্কিত এবং বেশিরভাগ (৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ) উত্তরদাতা বলেছেন যে তাদের কাছে জীবন অর্থহীন হয়ে পড়েছে।

প্রতিষ্ঠান দুটির মূল উদ্দেশ্য ছিলো করোনাকালীন বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য এবং মনস্তাত্তিক প্রভাবের বিভিন্ন স্তর অনুসন্ধান করা। এ জরিপটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি ক্রস সেকশনাল সমীক্ষা পরিচালনা করে।

গবেষকরা বলছেন, জরিপের ফলাফল থেকে বলা যায়, অনিদ্রা, বিরক্তি, উদ্বিগ্ন অবস্থা, নেতিবাচক চিন্তা তা নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। উত্তরদাতাদের হতাশা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে করোনা মহামারি বাংলাদেশের মানুষের মানসিক অবস্থার ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে।

এ গবেষণার চিফ ইনভেস্টিগেটর ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ (বিএনসিসিও), সহযোগী ইনভেস্টিগেটর ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর আবির ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ বিভাগের সিনিয়র লেকচারার ড. কিংসলে এগো, সহকারী গবেষক হিসেবে ছিলেন যথাক্রমে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেওয়ান মুহাম্মদ নূর-এ ইয়াজদানি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ত্বহা হুসাইন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
পিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।