জানা যায়, করোনা আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে প্লাজমা দানকারীদের আগ্রহী করে তুলতে তিনি এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন।
প্লাজমা উপহার প্রজেক্টের স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর ডা. মাহাবুবুর রহমান রাজীব বাংলানিউজকে বলেন. ডা. ফেরদৌস খন্দকার স্যারের উদ্যোগে প্লাজমা উপহার প্রজেক্টের উত্থান ঘটে।
তিনি বলেন, অনেকে প্লাজমা নিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে থাকে কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। প্লাজমা দেওয়ার ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার পর ২৮ দিন অতিবাহিত হবে। অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সব প্রকার উপসর্গ মুক্তির পর নূন্যতম ২৪ ঘণ্টা ব্যবধানের মধ্যে সংঘটিত পর পর দুইটি নেগেটিভ RT PCR টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসার পর ১৪ দিন পর প্লাজমা দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে এন্টিবডি টাইটার নূন্যতম ১:১৬০ থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে যেসব রোগীদের প্লাজমা প্রয়োজন হয়, তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্লাজমার ব্যবস্থা করে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
ডা. রাজীব বলেন, মানুষ যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তবে রোগীদেরও আমরা সহযোগিতা করতে পারবো না। আমাদের প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ মানুষের জন্য। মানুষ যেন স্বেচ্ছায় প্লাজমা ডোনেটে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে প্লাজমা থাকলে রোগীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আশাকরি যারা করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন তারা প্লাজমা দিতে আগ্রহী হবেন।
ডা. রাজীব বলেন, কোভিড ১৯ নিয়ে ‘ননস্টপ ২৪৭’ গ্রুপ ১৮ মার্চ থেকেই কাজ করে যাচ্ছে, যার সঙ্গে আমি প্রথম থেকেই যুক্ত এবং এখনও কাজ করে যাচ্ছি। এখন যেহেতু প্লাজমার ব্যাপারটা খুবই জরুরি এবং ম্যানেজ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তাই এই কাজটা সহজ করার জন্য এবং মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য প্লাজমা উপহার প্রোজেক্টে কাজ শুরু করেছি। বর্তমান এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে ২০টি কলে ১৯ জনই প্লাজমার প্রয়োজনে ফোন দিচ্ছে। তাই অনুরোধ থাকবে যারা করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন, আপনারা এগিয়ে আসুন। আপনারা সহযোগিতা করলে আমরা অনেকের জীবন রক্ষা করতে পারবো।
যারা প্লাজমা দিতে চান তাদের ০১৫৩৩-৯৮৭৯১৪ নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়ে ডা. মাহাবুবুর রহমান রাজীব বলেন, ডা. ফেরদৌস খন্দকার স্যার তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারা প্লাজমা ডোনেট করতে চান তাদের জন্য উপহারের ব্যবস্থা করেছেন। এক্ষেত্রে প্রথম ১০০ জনের জন্য একটি বরাদ্দ রয়েছে, প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হবে।
জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলে তার রক্তে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। রক্তের হলুদাভ জলীয় অংশেই থাকে সেটা। এটাই প্লাজমা। সুস্থ হওয়া রোগীর রক্ত থেকে এই প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিলে তার অ্যান্টিবডি বা করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। এটাই এখন প্লাজমা থেরাপি হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২০
এমএস/এনটি