ওই দালালদের কাজ হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন কৌশলে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অপচিকিৎসা করিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) র্যাব-২ এর পুলিশ সুপার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পঙ্গু হাসপাতালকেন্দ্রিক একটি দালালচক্র হাসপাতালের আশেপাশে অবস্থান করে। তারা এখানে (পঙ্গু হাসপাতালে) কোনোপ্রকার চিকিৎসা হয় না, ডাক্তার থাকে না, ভর্তি হওয়া রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এমন কথা বলে দেশের দূর- দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের ভয় দেখিয়ে তাদের ভাগিয়ে উন্নত চিকিৎসার আশ্বাসের নামে নামসর্বস্ব বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। এমনকি ভুয়া ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করিয়ে অনেককে চিরতরে পঙ্গুও করে দেয়। এরকম একটি চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গতকাল ১৫ জুন দিনগত রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে ৬ দালালকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল ও শ্যামলীস্থ সেবিকা হাসপাতাল হতে ১ ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানকালে জানা যায়, দালাল চক্রের প্রায় ৫০০ সদস্য উক্ত হাসপাতালগুলো ঘিরে দালালি করে থাকে। এ চক্রের সদস্যদের অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তারা হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রত্যেকটি স্তরে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে আসা নিরীহ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধা সৃষ্টি করে এই দালালরা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে তারা কৌশলে প্রচার করে হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না, রোগীর হাত-পা কেটে ফেলে, পঙ্গু হয়ে যায় এমন সব মিথ্যা তথ্য ছড়ায়। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হলে করোনায় রোগী মারা যায়। এমন বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে রোগীদের আশপাশের ক্লিনিকগুলোতে নিয়ে ভর্তি করায়। রোগীর বিনিময়ে ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দালালরা নিয়ে থাকে।
র্যাব-২ এর পুলিশ সুপার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী'র নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব পলাশ বসু সেবিকা হাসপাতালের পরিচালক ও ওটি ইনচার্জ ভুয়া ডাক্তার মো. সাইফুল ইসলাম (৩৮) -কে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং নিন্মমানের সেবা প্রদানসহ নিয়মিত ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালের মালিক এম এম শাখাওয়াত হোসেনকে ৪ লাখ টাকা এবং ম্যানেজার মো. মহিবুল্লাহ (৩০)- কে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
পঙ্গু হাসপাতালের দালালচক্রের সদস্য হলো- মো. রেজাউল করিম (৩০) মো. মানিক মিয়া (৩৮), মো. বিল্লাল হোসেন (৫০), মোছা. কল্পনা আক্তার (৪০), মোছা. মর্জিনা বেগম (৩৫), মোছা. আজিরন বেগম (৪২) -কে ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
হাসপাতালকেন্দ্রিক এসব ভুয়া ডাক্তার, দালালচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে র্যাব'র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
এজেডএস/এমএইচএম