সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট জেলায় এ পর্যন্ত ১৭৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে, ১৫৩০ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
এদিকে, নমুনা দেওয়ার পরে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় হতাশ রোগী ও রোগীর স্বজনরা। নমুনা নেওয়া সন্দেহভাজন রোগীর প্রতিবেশিরাও এক ধরনের আতঙ্কে থাকছে।
করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া এক রোগী বাংলানিউজকে বলেন, ৭ তারিখে নমুনা দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত রিপোর্ট পাইনি। জানিনা করোনা হয়েছে কি না। বাসার সবাইতো টেনশনে আছেই। প্রতিবেশিরাও নানা কথা বলছে। রিপোর্ট এলে বুঝতে পারতাম। চিকিৎসকদের কাছে রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে পেয়ে যাবেন একটু অপেক্ষা করেন।
নমুনা দেওয়ার পরে রিপোর্ট না পাওয়া এক রোগীর স্বজন রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ১০-১২ দিন আগে ভাইয়ের নমুনা নিয়েছে। কিন্তু এখনও রিপোর্ট আসেনি। ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভাল। তারপরও জোর করে ঘরে বদ্ধ করে রেখেছি। রিপোর্ট পেলে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত টেনশন কাটছে না।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসান বলেন, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে কিছুটা বিলম্ব হয়। ১২ দিন পরেও রিপোর্ট পেয়েছি। এ ধরনের হলে রোগী ও রোগীর স্বজনদের নিয়ম মানাতে অনেক কষ্ট হয়।
একই মন্তব্য করেন ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার সমাদ্দারও।
বাগেরহাট সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুর রব বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণঘাতী করোনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে অতিবিলম্ব হওয়া ভয়াবহ। কারণ এদের মধ্যে যারা পজিটিভ, তারা অজান্তে সামাজিক সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে ভয়াবহ এ রোগের দ্রুত বিস্তার হচ্ছে।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরীক্ষার ফল দেরিতে আসা খুব দুঃখজনক। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ১৮ লাখ লোক অধ্যুষিত এ জেলায় কোনো পিসিআর ল্যাব নেই এটাও কষ্টের। তাই করোনার মহা-দুর্যোগের সময়ে সঠিক পরীক্ষা ও এ জেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখানে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানায়।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, বাগেরহাট জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে স্থানীয় নমুনার চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের ১২০টি নমুনা অপেক্ষমান রয়েছে। আমরা যোগাযোগ করেছি যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নমুনাগুলোর পরীক্ষা রিপোর্ট পাওয়া যায়। আর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে যেসব নমুনা পাঠানো হচ্ছে তা দ্রুত পাওয়া যাচ্ছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, বাগেরহাটে পিসি আর মেশিন স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে বলা হয়েছে। আশা করি বাগেরহাটে পিসি আর ল্যাব স্থাপন হলে বাগেরহাটের নমুনাগুলোর রিপোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগ দ্রুত পাবে। সময়মত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
এনটি