ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

‘যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, আমাদের চেষ্টায় কুলাবে না’ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
‘যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, আমাদের চেষ্টায় কুলাবে না’ 

ঢাকা: উৎপত্তিস্থলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো না গেলে রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে সরকারের নেওয়া ব্যবস্থায় কুলাবে না বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

পর্যটন কেন্দ্র, বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি সীমিত করতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বুধবার (২৪ মার্চ) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটা কমে গিয়ে রোগীর সংখ্যা তিন থেকে চারশোর ঘরে নেমে এলেও গত কয়েক দিন ধরে তা বাড়ছে। সবশেষ মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৫৪ জনে। আর মৃত্যু হয় ১৮ জনের।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন করোনা একটু বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশ দেখেছি, যেটা ২ শতাংশের একটু বেশি ছিল। এখন একদিনে সাড়ে তিন হাজার সংক্রমিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কেন বাড়ছে? বাড়ার উৎপত্তস্থলগুলো কোথায়? সেই বাড়ার উৎপত্তিস্থল বন্ধ করতে হবে। হাসপাতালে যে সমস্ত রোগী এসেছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি তারা বেশিরভাগ কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছেন, বান্দরবান গিয়েছেন না হয় কুয়াকাটায় গিয়েছেন, নয়তো অন্য কোনো ভেন্যুতে গিয়েছেন, না হয় পিকনিকে গিয়েছেন। সেই বিষয়গুলো আমাদের অবশ্যই কমাতে হবে। বিয়েসাদিতে, ওয়াজ মাহফিলে, আমাদের অন্যান্য যে সামাজিক অনুষ্ঠান সেগুলোতে জনসমাগম সীমিত করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিয়েছে। বান্দরবান এলাকায় ডিসিদের দিয়েছি। তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। প্রয়োজন হলে ফাইনও করবেন।

জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলো অনেক রোগীতে ভরে গেছে। ঢাকা শহরে অনেক রোগী বাইরে থেকে আসছে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমরা এরমধ্যে বেশ কয়েকটা হাসপাতাল করোনার আওতায় নিয়ে এসেছি। ঢাকার বাইরে গাজীপুর, টাঙ্গাইলে হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তর সিটির আইসোলেশন সেন্টার সবচেয়ে বড় স্থান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের তো চেষ্টা বজায় থাকবে। কিন্তু রোগীর উৎপত্তি বা সংখ্যা কমাতে হবে। রোগী যে হারে আসছে, যে হারে সংক্রমিত হচ্ছে, এটা যদি হতে থাকে তাহলে এই ব্যবস্থাও আল্টিমেটলি কুলাবে না। কাজেই আমাদের দেশ ও দেশের ইকোনমিকে রক্ষা করতে হলে এবং দেশের মানুষের কাজ-কর্ম যদি বজায় রাখতে হয় তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

করোনা টিকার কার্যক্রম চলমান আছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে মানুষের বিভ্রান্তি ছিল যে, টিকা নিয়ে সমস্ত প্রতিরোধ গড়ে উঠবে—আসলে কিন্তু তা নয়। টিকা নিলে আপনি সংক্রমিত হতে পারেন। হয়তো রোগ প্রতিরোধ করতে পারে, হাসপাতালে নিতে হবে না। আমরা দ্বিতীয় টিকা এখনও দেইনি। আমাদের যে ভালো অবস্থা ছিল আমরা সবাইকে নিয়ে সেই ভালো অবস্থায় রাখতে চাই। রাখতে পারবো।

লকডাউন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত যখন হবে তখন আপনাদের আমরা জানিয়ে দেব। লকডাউনের বিষয়টা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেয় না। আমরা এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি, স্বাস্থ্যসেবার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি।

তিনি বলেন, উৎপত্তিস্থলগুলোকে ধরতে হবে, কন্ট্রোল করতে হবে। তাহলে রোগী কমবে। পর্যটন এলাকা থেকে বেশি সংক্রমিত হয়েছে। আমরা চাই এগুলোকে সীমিত করতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।