নারায়ণগঞ্জ: আলী আজগর (ছদ্মনাম) যাবেন বিদেশে। নিয়ম অনুযায়ী তাই ফ্লাইটের ২৪ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট করিয়েছেন।
সেই ফোনে তাকে বলা হয়, ‘হ্যালো, আপনি তো করোনা পজিটিভ! আপনার ফ্লাইটও আজ। এখন তো আপনার মহা সমস্যা হয়ে গেল। আমার কাছে একটি উপায় আছে, যদি ১৪ হাজার টাকা দিতে পারেন তাহলে টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ করে দেব। ’
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালের সামনে কথা হয় ভুক্তভোগী আলী আজগরের সঙ্গে। তিনি ফ্লাইটের কারণে নিজের পরিচয় গোপন রেখে এ কথা জানান।
বিষয়টি জানতে চাইলে ল্যাবের দায়িত্বে থাকা হাসান বলেন, আমার নাম করে এই টাকা আদায় করে হচ্ছে, অথচ আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। নমুনা সংগ্রহ করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। আমি নিজেই থানায় এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। গতকাল পুলিশ এসেছিল তাদেরও বলেছি। তদন্ত হোক, আমি চাই এই চক্রটি বের হোক আর মানুষ এই চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি পাক।
তিনি আরও বলেন, নতুনা নেওয়া ব্যক্তির নম্বর চক্রটি কিভাবে পায়, সেটিও একটি প্রশ্ন। এখানে যারা নমুনা সংগ্রহ করে, তাদের পাশাপাশি প্রয়োজনে আমাদের ব্যাপারেও তদন্ত হলে আমার আপত্তি নেই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাশার বলেন, সদর থানা পুলিশ, জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা সিভিল সার্জন অফিস, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। সেখানে যে তিনটি নম্বর থেকে ফোন দেওয়া হয়, সেই নম্বরগুলোও দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা, যেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় সেখান থেকে কোনোভাবে বা পথে এই নম্বরগুলো বাইপাস হয়। আমি নানাভাবে তদন্ত করেছি, আমার হাসপাতাল থেকে হয় না। আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান বলেন, নমুনা সংগ্রহের বুথ থেকে এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই। আর পজিটিভকে কীভাবে কেউ নেগেটিভ করতে পারবে? এভাবে তো রিপোর্ট বদল করার সুযোগ নেই। এখানে একটা বিষয় থাকতে পারে, যেহেতু আমাদের লোকবল নেই যে প্রতিটা রিপোর্টের ফরম এখানে পূরণ করে দেবে, সেজন্য অনেকে ফরম বাইরে থেকে পূরণ করে আনেন। সবাই তো আর নিজেরা ফরম পুরণ করতে পারে না। সেখান থেকে হয়তো নম্বর যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু মাত্র জানলাম, অবশ্যই আমিও বিষয়টি নজর দেব। হয়তো দু-একজন দালালের এখানে অনুপ্রবেশ ঘটে থাকলেও থাকতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
এমআরপি/জেএইচটি