আপনার শিশুর থাকার ঘরটি কি বাস্তুমতে সাজানো? সেই ঘরে কি যথেষ্ট পরিমাণে ‘পজিটিভ এনার্জি’ প্রবেশ করতে পারে? আপনার শিশুর ঘরটি কি তার ভবিষ্যৎ জীবনের উন্নতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করার মতো পরিবেশ তৈরিতে সক্ষম? শিশুর ঘর সাজাবার আগে জেনে নিন বাস্তুমতে ঠিক কি রকম হওয়া উচিৎ আপনার শিশুর ঘরটি।
মনে রাখবেন ছোটবেলার অনেকটা সময় আপনার শিশু কাটায় তার এই ঘরটিতে।
তার ছোটবেলার ঘর বাকি জীবনে বিভিন্ন ধাপে তাকে অনুপ্রাণিত করে, করে তোলে স্মৃতিমেদুর। ঘরের নিরাপদ আশ্রয়ে যেমন তার পরিবারকে চিনতে শেখে, ঠিক তেমনই এ ঘরের কোণে খেলতে খেলতে সে নিজেকে কখনো চিকিৎসক, কখনো পাইলট কিংবা কখনো একজন বড়মাপের প্রকৌশলী হিসেবে কল্পনা করতে থাকে।
আবার এ ঘরে বসেই সে পড়াশোনা করে। তাই ঘর হওয়া উচিত এমন যেখানে থাকবে শিশুটির চলাচলের জায়গা, খেলার জায়গা, সঙ্গে থাকবে পড়াশোনায় নিরবচ্ছিন্ন মনোসংযোগের ব্যবস্থা।
তবে এসব কিছুর ব্যবস্থা করা খুব একটা কঠিন নয়। বাস্তুমতে সহজেই এ ব্যবস্থা করা যায়। যা মোটেই খরচ সাপেক্ষতো নয়ই, অনেক ক্ষেত্রে খুব সামান্য পরিবর্তন করলেই তা সম্পন্ন হয়ে যায়।
মনে রাখতে হবে এই সামান্য বাস্তু পরিবর্তনগুলি আপনার সন্তানের জীবনকে সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যে ভরা এবং রোগমুক্ত জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিশুটি একদম কথা শুনছে না, পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না, খাওয়া-দাওয়াও ঠিক মতো না করার ফলে স্বাস্থ্য ভালো হচ্ছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এসমস্ত সমস্যা লুকিয়ে আছে শিশুটির বাসস্থানে, বিশেষ করে তার থাকার ঘরে।
নীচে দেওয়া সাধারণ বাস্তুনিয়মগুলি পালন করে দেখুন আপনার ঘরের শিশুটির মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
১. বাচ্চাদের ঘরের প্রবেশদ্বার উত্তর অথবা পূর্ব দিকে হওয়া উচিত। পূর্ব দিকে জানালা থাকা ভালো, যাতে জানলা দিয়ে সূর্যের প্রথম আলোটি আপনার শিশুর ঘরে প্রবেশ করতে পারে।
২. বাচ্চাদের পড়ার টেবিলের মুখ উত্তর বা পূর্ব দিকে রাখা উচিত। বাচ্চাদের ঘরের ঈশাণ কোণে একটি ছোট প্রার্থনার জায়গা রাখা উচিত। যেখানে বসে বাচ্চাটি প্রার্থনা করতে পারবে।
৩. মনে রাখবেন, ঈশাণ কোণের দিকটি যেন সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। সেখানে কোনো অপ্রয়োজনীয় বস্তু, ডাস্টবিন রাখা উচিত নয়। মনে করে ঘরটি প্রতিদিন পরিষ্কার করা উচিৎ।
৪. বাচ্চাদের বিছানা বাস্তুমতে নেতৃত্ব কোণে রাখা উচিত। দক্ষিণ দিকে মাথা করে ঘুমনো ভালো। তবে বাচ্চারা পূর্ব দিকেও নিজের মাথা রেখে ঘুমোতে পারে।
৫. বাচ্চাদের ঘরের মাঝখানে কোনো ভারী জিনিস রাখবেন না। সেই স্থানটি বাচ্চাদের খেলাধুলোর জন্য খালি রাখুন। ঘরে রং হাল্কা সবুজ হলে ভালো। এর ফলে বাচ্চাদের বুদ্ধিমত্তা বাড়ে।
৬. বাচ্চাদের ঘরের প্রবেশদ্বার কখনও সিঁড়ি, শৌচালয়ের লাগোয়া থাকা উচিত নয়। না-হলে বাচ্চারা মা-বাবার কথার অনুসরণ করে না।
এগুলি মেনে চললে খুব দ্রুত ফলাফল পাবেন এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪