টেনশন আজকের জীবনে একটি অভিশাপের মতো। কিন্তু কে দায়ী এই টেনশনের জন্য? বদলে যাওয়া সমাজ জীবন নাকি জীবনে বাড়তে থাকা চাহিদার স্তূপ।
টেনশনের একটি বড় কারণ বাস্তুদোষ। আমার লক্ষ্য করলে দেখতে পাব এই টেনশনের সমস্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে বিগত দুই দশকের কিছু বেশি সময় ধরে। কিন্তু এর আগে কেন এই সমস্যা ছিল না? কেনই বা শেষ দুই দশকে এই সমস্যার এত বাড়-বাড়ন্ত? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বাস্তুশাস্ত্র।
বাস্তুশাস্ত্রের পদ্ধতি ধরে গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে আজ থেকে দুই থেকে তিন দশক আগে প্রায় সব ঘর আয়তাকার হতো। এবং কখনোই ওই ঘরের মধ্যে পানির ট্যাংকি বা সেপটিক ট্যাংকি থাকত না। এখন ফ্ল্যাটের মধ্যেই সবকিছু থাকছে এবং বেশিরভাগ সময়ে সেটি বাস্তুনিয়ম না মেনে। ফলে টেনশন বাড়ছে।
জেনে নিন ১৯টি অত্যন্ত গুরুতর কারণ,যার ফলে আপনার জীবনে বাড়তে পারে টেনশন-
১. ঘরের সামনের অংশ ভাঙা হলে, দেওয়ালের প্লাস্টার উঠে গেলে বা কোনোরকম খুঁত থাকলে ঘরের কর্ত্রী বার বার অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সঙ্গে এতটাই অবসাদে ভুগতে পারেন যে কখনোই মানসিক শান্তি কপালে জোটে না।
২. বাড়িতে রান্নাঘর এবং গোসলখানা এক সরলরেখায় অবস্থান করলে সেই গৃহকর্তার ছোটো ভাই ও মেয়ে কোনোদিন মানসিক শান্তি পায় না।
৩. বাড়ির অগ্নিকোণ (দক্ষিণ-পূর্ব) নিচুতে অবস্থান করলে কর্তা অন্যায়কাজে জড়িয়ে পড়তে পারেন। বাড়িটিরও অগ্নিভয় ও শত্রুভয়ের দোষে দুষ্ট হওয়ায় টেনশন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪. একইভাবে বায়ুকোণ (উত্তর-পশ্চিম) সমস্যাজনক হলেও সেই বাড়ি শত্রুভয়ের দোষে দুষ্ট হতে পারে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির কর্তার মানসিক স্থিতি নষ্ট হয়।
৫. জমির পূর্বদিক ও অগ্নিকোণ নিচু আর বায়ুকোণ ও পশ্চিমদিক উঁচুতে থাকলে জমির মালিক নানা ব্যক্তির সঙ্গে বার বার ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়বেন। ফলে টেনশনও বাড়বে।
৬. বাস্তু বলছে, ঘরের দক্ষিণদিক ও অগ্নিকোণ নিচু হলে আর বায়ুকোণ এবং পশ্চিমদিক উঁচু হলে ক্রমাগত ঋণ নেওয়া আর অসুখে ভোগার জন্যই মানসিক শান্তি নষ্ট হতে পারে।
৭. ঘরের দক্ষিণদিক নিচু ও উত্তর দিক আর ঈশানকোণ উঁচু হলে গৃহকর্তা সবসময় ভোগ-বিলাসে মেতে থাকেন। আর বাকি সদস্যদের মানসিক অশান্তিতে ভোগার সম্ভাবনা বাড়ে।
৮. একইসঙ্গে বাড়ির উত্তর, পূর্ব, পশ্চিম দিক আর ঈশান কোণ নিচু এবং দক্ষিণ দিক ও বায়ু আর অগ্নিকোণ উঁচুতে থাকলে বাসিন্দাদের ভয়ঙ্কর অর্থকষ্টে ভোগার সম্ভাবনা বাড়ে।
৯. ঘরের উত্তর, পূর্ব, পশ্চিমদিক, ঈশান আর বায়ুকোণ নিচু এবং অগ্নি আর দক্ষিণ ও পশ্চিমদিক উঁচু হলে কন্যা সন্তানের কপালে কখনো সুখ-শান্তি জোটে না। ফলে অন্যদেরও মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হয়।
১০. কোনো জমির পূর্ব দিক উঁচু বা নিচু হলে বা পূর্বদিকের দেওয়াল ঘেঁষে রাস্তা কিংবা ঘর থাকলে সেই বাড়ির সন্তানের জীবনে গভীর সংকট তৈরি হয়। পরিবারের অন্যরাও নানাভাবে অপমানিত হন।
১১. দক্ষিণদিক, পশ্চিমদিকের এক ভাগ বা সমস্ত দিক নিচু জমিতে বাড়ি তৈরি হলে সদস্যদের আয়ের তুলনায় ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বার বার ঋণ নিতে হয়।
১২. জমির বায়ুকোণ উঁচু হলে, পশ্চিমদিক ও বায়ুকোণের মাঝে অথবা বায়ুকোণ আর উত্তরদিকের মাঝখানে বাড়ি তৈরি হলে বাস্তু দোষে আপনা থেকেই পরিবারে শত্রু সংখ্যা বাড়বে। বাড়ির মালিকও বার বার অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
১৩. বাড়ির ঈশান কোণ উঁচু হলে, বায়ুকোণ বা উত্তরদিক এবং ঈশান কোণের মাঝখানে কুয়া, পানির ট্যাংকি, চেম্বার ও পয়ঃপ্রণালী বা কোনো ধরনের গর্ত থাকলে পরিবারে আয়ের তুলনায় ব্যয় হবে বেশি। এছাড়া মানসিক চাপও বাড়বে।
১৪. বাড়ির সদর দরজা উত্তর দিকে রেখে বায়ুকোণে ঘর বানালে বাড়ির কর্তার ঐশ্বর্য-সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। এর পাশাপাশি আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় নির্ধন হওয়ারও সম্ভাবনা থেকেই যায়।
১৫. বায়ুকোণ শক্তিশালী হলে বাড়ির মালিক পদে পদে বাধা-বিপত্তির মুখে পড়েন। আর অত্যধিক খরচের জন্য সবসময় অর্থকষ্টে ভোগেন।
১৬. বাড়ির বায়ুকোণ আর পশ্চিমদিক একই সঙ্গে শক্তিশালী হলে পরিবার ধন নাশজনিত কারণে সবসময় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন।
১৭. একইভাবে উত্তরদিক আর বায়ুকোণ একসঙ্গে শক্তিশালী হলে বাড়ির সদস্যরা অর্থকষ্টে ভোগেন, অকারণে অপমানিত হন এবং মানসিক শান্তি থাকে না বললেই চলে।
১৮. দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ বায়ুকোণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একত্রে শক্তিশালী হলে বাড়ির মালকিন দীর্ঘ অসুস্থতা ও একাধিক শত্রুর উপদ্রবের কারণে কখনও মানসিক শান্তি পান না।
১৯. ঈশান কোণ ছোটো এবং অগ্নিকোণ বড়ো হলে পরিবারে ঝগড়াঝাঁটি আর অসুস্থতা লেগেই থাকে।
তাই বাড়িতে টেনশন কমাতে এই বিষয়গুলোতে নজর দিন।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
এসআর