ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বিনা অপরাধেও জেল খাটার ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৩
বিনা অপরাধেও জেল খাটার ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা

কলকাতা: কথায় বলে অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে কালকুঠুরিতে থাকার চেয়ে যেন মৃত্যুও ভালো। তবে এ থাকা যদি হয় স্বেচ্ছায়।

তবে কেমন হবে? অ্যাডভেঞ্চার মানুষকে কোথায় না নিয়ে যায়, কখনও দুর্গম পাহাড়ে আবার কখনও গভীর জঙ্গলে কিংবা মরুভূমিতে। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষরা সেসব স্থানে ছুটে যান নতুন অভিজ্ঞতার টানে।

এ রকমই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের ‘জেল খাটার’ অভিজ্ঞতার ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা। যে কেউ চাইলে এ অভিজ্ঞতার ভাগিদার হতে পারেন বিনা অপরাধেই। টিকিট কেটে জেলে থাকার ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা। দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছে মিউজিয়াম। সেখানেই হচ্ছে এ ব্যবস্থা। ইচ্ছে থাকলে যে কেউ টিকিট কেটে জেল সফর করে আসতে পারেন।

ছোট্ট একটি ঘর, তার মধ্যেই থাকা-খাওয়া থেকে সবকিছু। লোকচক্ষুর আড়ালে জেলবন্দি জীবন যে কী ভয়ঙ্কর! তা বহুবারই উঠে এসেছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। এবার সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেন অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা। যদিও সম্প্রতি ভারতের উত্তরাখণ্ড ও মহারাষ্ট্র সরকারও এমন জেলের মধ্যে পর্যটনের বন্দোবস্ত করেছে। তবে কলকাতায় এ প্রথম।

প্রায় ১৫ একর জমির ওপর বিস্তৃত আলিপুর জেল বর্তমানে আলিপুর জেল মিউজিয়ামে রূপান্তরিত হয়েছে। সোমবার বাদে বাকি দিন দুপুর ১২ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ মিউজিয়ামটি খোলা থাকে। ইতোমধ্যে পরাধীন ভারতের বীর বিপ্লবীদের সম্মান জানিয়ে, গত বছর থেকে শুরু হয়েছে জেল মিউজিয়াম। সেখানে রয়েছে ক্ষুদিরামসহ ব্রিটিশ সরকারের বিরোধীদের ফাঁসির মঞ্চ, নেতাজি, চিত্তরঞ্চন, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত বন্দি থাকা গরাদ।  

এখানেই বন্দি ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু। সেই স্থানও সুরক্ষিত রাখা রয়েছে। যেখানে ইন্দিরা গান্ধী প্রতি দুই সপ্তাহে একবার ২০ মিনিটের জন্য দেখা করতেন নেহেরুর সঙ্গে। এ রকম নানা জায়গা ঘুরিয়ে দেখানো হয় পর্যটকদের। পাশাপাশি চলতি বছরে শুরু হয়েছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো। এর বাইরে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আরও ৫০টির মতো সেল তৈরি হয়েছিল। এবার সেগুলোকেই কটেজে রূপান্তরিত করা হবে বলে জানা গেছে।

সেখানে পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে ওই সেলগুলোতে আধুনিক শয্যা, সোফা, বাতানুকূল যন্ত্র, টিভি, ফ্রিজ, আধুনিক শৌচালয়সহ নানা রকম আয়োজন থাকছে। তবে কমপক্ষে দুদিনের জন্য বুকিং করতে হবে। এ দুদিন বাইরের জীবনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখা যাবে না। অর্থাৎ ইচ্ছে করলেই আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের বাইরে যেতে পারবেন না পর্যটকরা। বুক লাইব্রেরি ও স্মার্ট টিভির মধ্যেই কাটতে হবে জীবন। হাতে নাও থাকতে পারে মোবাইল ফোন। তবে মোবাইল ফোন থাকবে কিনা, তা নিয়ে এখনও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

রুম পাওয়া যাবে দুই রকম, স্ট্যান্ডার্ড ও ডিলাক্স। রুম অনুযায়ী হবে আলাদা আলাদা ভাড়া। এছাড়া থাকবে ক্যান্টিন। রুম সার্ভিসের ব্যবস্থাও করা হবে পর্যটকদের সুবিধার্থে। খুব শিগগিরই এ ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। অনেকেই দার্জিলিং, সিকিম ঘুরে বন্ধু-স্বজনদের অভিজ্ঞতার গল্প শোনায়। এবার কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে সেই অভিজ্ঞতায় যুক্ত হতে চলেছে জেল ফেরত জীবনের সময়টুকুর বর্ণনার গল্প।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৩
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।